দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর নেত্রকোনায় শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন

দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর নেত্রকোনায় শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি ;

নেত্রকোনার মদনে চতুর্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রী পরশমনি হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। ঘটনার দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর “পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)” এই চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে।

আজ (২৬ ডিসেম্বর)সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে নেত্রকোনা পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, অনৈতিক কাজ করতে না পেরে চতুর্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রী পরশমনি (৯) কে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় জোবায়ের (২৩) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে নেত্রকোনা পুলিশ ব্যুরো অবইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃত জোবায়ের উপজেলার কদমশ্রী গ্রামের মৃত হামিদুর রহমানের ছেলে।

নেত্রকোনা (পিবিআই) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর কবির তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যার কিছু সময় আগে মেয়েটি তার ছোট ভাইকে নিয়ে প্রতিবেশী জুয়েল মিয়ার বাড়ির সামনে খেলা করছিল। তখন নিরবতার সুযোগ পেয়ে আরেক প্রতিবেশী জোবায়ের রহমান (২৩) শিশুটিকে প্রলোভন দেখিয়ে পাশের একটি ঝোপের আড়ালে নিয়ে যায়। সেখানে জোবায়ের তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। কিন্তু শিশুটি ভয়ে চিৎকার শুরু করলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে। ওই দিন রাতে পরিবারের লোকজন শিশুটিকে খোঁজতে বের হলে জোবায়েরও শিশুটির পরিবারের সঙ্গে শিশুটিকে খোঁজাখুঁজির অভিনয় করে।

ঐদিন আনুমানিক রাতেই জোবায়ের শিশুটির লাশ ঝোপের আড়াল থেকে নিয়ে পাশের একটি বিলে ফেলে দেয়। পরদিন বিল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার পরদিন নিহত শিশুটির বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। থানা থেকে এক বছর পর মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু পুলিশ ও ডিবি এক বছরের অধিক সময়ে তদন্ত করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে না পেরে ২০২০ সালের নভেম্বরে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির জানান, বাদীর নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর আদালত ‘পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’ নেত্রকোনা- কে মামলাটির তদন্তের ভার দেন। পরে পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. নুরুল ইসলাম খান মামলাটি তদন্ত শেষে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেন।

পিবিআই পরিদর্শক মো. নুরুল ইসলাম খান জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করে এই মামলার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা শহরের সাতপাই এলাকা থেকে আসামি জোবায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল রবিবার বিকোলে তাকে আদালতে হাজির করা হলে কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পরশমনিকে হত্যার কথা স্বীকার করে জোবায়ের এবং আদালতে বিচারকের কাছে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে আসামী জোবায়ের জেলহাজতে রয়েছে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন