হোসেনপুরে কাঁচা মরিচের চড়া দামে মহাখুশি কৃষক

হোসেনপুরে কাঁচা মরিচের চড়া দামে মহাখুশি কৃষক
মাহফুজ হাসান,স্টাফ রিপোর্টার:
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের  চরাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে ফুটেছে প্রশান্তির হাসি।কাচাঁ মরিচের চড়া দামে হৈচৈ পড়ে গেছে উপজেলার চরাঞ্চলে।মরিচের দাম পেয়ে প্রায় আধা পাকা মরিচ তোলার হিড়িক পড়েছে মাঠে মাঠে।
দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে বেপারীরা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে। শীতের তীব্রতায় কিম্বা কুয়াশার ধুম্রজালে ঘর থেকে বের হওয়ায় কঠিন তাই তোলা হচ্ছে না অন্যান্য অঞ্চলের কাঁচা মরিচ। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে সরবরাহ করা হচ্ছে কিশোরগঞ্জের মরিচ এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে।
শুক্রবার  বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মরিচচাষীরা সুখের নিশ্বাস ফেলছেন।গত বছর মরিচে তেমন মুনাফা অর্জন করতে পারেনি গৃহস্তরা।তাই মরিচ চাষে অমনোযোগি হয়ে চাষাবাদ করেছেন কিছুটা কম।কিন্তু চড়া দামের খবরে হৈচৈ পড়ে গেছে।মরিচ চাষে শুধু চাষিরাই লাভবান হননি, বেশি দাম পাওয়ায় লাভবান হয়েছেন কৃষক-শ্রমিক-ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার  (১৫ জানুয়ারি)  প্রতিমণ কাঁচা মরিচ ৩৮০০- ৪০০০ টাকা,যেখানে গত ৩/৪ দিন আগেও ১৮০০- ২০০০ হাজার টাকা মণ পাইকারি বাজার গুলিতে।তারও ৩/৪ দিন পূর্বে
২০০০ হাজারের নিচে ছিল।গত বৃহস্পতিবার উপজেলার কেন্দ্রীয় বাজার হোসেনপুরে খুঁজ খবর নিয়ে জানা যায় ২৫০০-৩০০০ হাজার।শুক্রবার হাজীপুর পাইকারি বাজারে দেখা যায় ৩৮০০-৪০০০।আবার শনিবার মরিচের দাম নেমে এসেছে ২৪/২৫ শ টাকা মণ প্রতি।
 শনিবার(১৪ জানুয়ারি)  পিতলগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, একদিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কমে গেছে ১৫শ টাকার মত।বিক্রি হচ্ছে ২৪ শ-২৫ শ টাকা দরে।তবুও লাভের অংক গুনছে কৃষককুল।
উপজেলার চরকাওনা,জামাইল,বিশ্বনাথপুর,সাহেবেরচর,
চরকাটিহারী, চর হাজীপুরে মরিচের চাষ সিংহভাগ।  প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জমিতে করা হয়েছে মরিচের আবাদ।
কেউ মরিচ ক্ষেত পরিচর্যা করছেন, কেউ মরিচ তুলছেন আবার কেউ বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন।চড়াদামের খবরে কৃষক-কৃষাণীদের দৌড়-ঝাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে রাত-দিন।
শুক্রবার  সাহেবের চর গ্রামের মরিচ চাষি আফাজ উদ্দিনের সাথে কথা হয় তিনি জানান, ভাবছিলাম মইচ হুগায়াম, হুগালে অধিক টেহা পাওয়া যায় কিন্তু দাম বাড়ার কথা হুইন্না মইচ এক তোলা দিছি ৩/৪ দিন আগে বেচ্ছি ২২০০ টেহা মন, এহন আবার  ৩/৪ দিনের ব্যবধানে ৪০০০ হাজার টেহা মণ অয়া গেছে।
শনিবার সকালে অন্য এক কৃষক বাচ্চু মিয়া জানান,মইচ ক্ষেত করবার কোনো ইচ্ছা আছিন না,নিজেরা খাওয়ার লাইগ্গা ১০ শতাংশ জমিন করছিলাম অহন দামের কথা হুইন্না প্রায় অর্ধেক পানহা মইচ উডাইতাছি, কোদাল দিয়া কুবায়া চাষ করছিলাম, সব মিলিয়া ৫ শ টেহা খরচ হয়ছিন।এক তোলানই বেচতে পারাম ১৫/২০ হাজার টেহা।
উপজেলার নারী শ্রমিকরা জানান, এবার মইচের ফসিল ভালা হওয়ায়,দাম চড়া থাহায় মালিকরা অনেক লাভ করতাছে। আমরাও বাড়ির কাছে মরিচ তোলার  কাম কইরা সংসার চালাইতেছি।আমরাও দাম আগের থাইক্কা বেশি পাইতাছি।
স্থানীয় পাইকার কফিল উদ্দিন ও মুনসুর আলী   জানান, চলতি মৌসুমে
মরিচের দাম হু হু করে বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা আনন্দে হুর মুরি খেয়ে খুঁজতেছেন মরিচ তোলার নারী শ্রমিক। তারা আরও বলেন মরিচ হল কাঁচামাল, দাম প্রতিদিনই বাড়ে-কমে মরিচের বাজার স্থায়ী থাকেনা।দুদিন আগেও মরিচ কিনেছি ২ হাজার  ২২ শ টাকা, গতকাল বাজার ৩৮ শ ৪ হাজার গেছে।কিন্তু আজকের বাজার আবার ২৪/২৫ টাকা।

আপনি আরও পড়তে পারেন