১৯৭৫ সালে আপনাদের গণতন্ত্র-মানবাধিকার কোথায় ছিল?

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, আজকে অনেকে গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের সবক দেন। যারা এখন আমাদের সবক দিতে আসেন তাদের কারও অতীতে ত্যাগের ইতিহাস জানা নেই। ২১ আগস্টসহ শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল, তখন কোথায় ছিল গণতন্ত্র-মানবাধিকারকর্মীরা।

আজ (বুধবার) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী।

পশ্চিমা একটি দেশের দিকে ইঙ্গিত করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে তাদের কণ্ঠ কোথায় ছিল? ওই সময় তারা তো মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে ছিল। ’৭৫-এ তারা তো সরাসরি যুক্ত ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে। সেদিন যারা নিহত হয়েছেন তাদের মানবাধিকার ছিল না? বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না? ২০০৪-এর ২১ আগস্টে ১৯৭৫-এর অসমাপ্ত কাজ করার জন্য সেই ঘাতকরা শেখ হাসিনাকে শুধু হত্যা করা নয়, সমগ্র আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা করেছিল।

দীপু মনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার থামাতে সেই সব দেশের কর্তাব্যক্তিরা শেখ হাসিনাকে বারবার ফোন করেছেন, চাপ প্রয়োগ করেছেন। রাজনীতিতে শিষ্টাচার বিএনপি-জামায়াত বোঝে না। তারা অনন্তপক্ষে ২১ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। ৭৬ কেজি বোমা, ৪৮ কেজি বোমা, গ্রেনেড হামলা, সরাসরি গুলি কিছুই বাদ দেওয়া হয়নি। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনটা রাজনীতি আর কোনটা অপরাজনীতি। এসব থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে পথ চলতে হবে।

নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাঠ্যসূচিতে সত্য ইতিহাস তুলে ধরব। অতীতে যে ইতিহাস বিকৃতির মহোৎসব চলেছে তা থেকে আমরা বের হয়ে এসেছি। তরুণ প্রজন্মকে সত্য ইতিহাস জেনে সামনে এগোতে হবে। নতুন পথ রচনা করতে হবে।

আলোচনা সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চর্চার প্রধান অন্তরায় বিএনপি ও জামায়াত, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না করে ইনডেমনিটি আইন জারি এবং সংবিধান পরিবর্তন করা। আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠন করে যুদ্ধাপরাধী নিজামী-মুজাহিদকে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য করে  রাজনীতিকে পরস্পর বিরোধী দুটো আদর্শিক ধারায় বিভক্ত করা হয়েছে। এটাই হলো বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটের মূল কারণ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা বক্তব্য রাখেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন