দৈনিক আগামীর সময়ের প্রকাশক ও সম্পাদক আসাদুজ্জামান হলেন ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী খানেপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি।
বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাতা তারই বাবা সর্বজন শ্রদ্ধেয় মরহুম আনিস আহমেদ (আনিস মাস্টার)।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় ভোট গ্রহণ কার্যক্রম। যদিও অনেক আলোচনা সমালোচনার অবতারণা হয়েছে এ নির্বাচনে।
জানা যায় যে, গত ৬ নভেম্বর ২০২৩, নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচন পরিচালনার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহ্ জালাল সাহেবকে নিয়োগ করেন। তিনিই তফসিল ঘোষণা করেন। ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করে ২৮, ২৯ ও ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা দানের তারিখ দেয়া হয়।
প্রচারণা কম হওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রিজাইডিং অফিসার ভোট গ্রহণের তারিখ অপরিবর্তিত রেখে ৩০ নভেম্বর, ৩ ও ৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা দানের পুনঃ তফসিল ঘোষণা করেন। ৫ ডিসেম্বর বাছাইকালে একটি মহলের অসহযোগিতার কারণে জাতীয় নির্বাচনের অযুহাতে নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
৭ জানুয়ারি ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রিজাইডিং অফিসার তথা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের অফিসে যোগাযোগ করলে অতঃপর ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে পুনঃতফসিল (৩য় বার) ঘোষণা করেন।
গত ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ছিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ।
‘প্রতিষ্ঠাতা সদস্য’ ক্যাটাগরীতে একমাত্র প্রার্থী প্রতিষ্ঠাতা তনয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং জাতীয় দৈনিক “আগামীর সময়” পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান, ‘দাতা সদস্য’ ক্যাটাগরীতে আজীবন দাতা সামসুদ্দিন আহমেদ,
‘শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য (সাধারণ)’ ক্যাটাগরীতে ২টির বিপরীতে জমা পড়েছে ৪টি মনোনয়নপত্র। যথাক্রমে (১) আনিচুল হক রুবেল, (২) চিত্তরঞ্জন মণ্ডল, (৩) মোজাফ্ফর আহমেদ ও (৪) মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান;
‘শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য (সংরক্ষিত)’ ক্যাটাগরীতে একমাত্র প্রার্থী মিসেস আফরোজা আক্তার,
‘অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য (সাধারণ)’ ক্যাটাগরীতে ৪টির বিপরীতে মনোনয়নপত্র জমা পরে ৮টি। যথাক্রমে (১) আব্দুল হোসেন, (২) আলমগীর হোসেন, (৩) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আ্লম, (৪) পরিমল চক্রবর্তী, (৫) শেখ মাছুম, (৬) মো. মিলন হোসেন, (৭) রেজাউল করিম ও (৮) শাহ্ আলম;
‘অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য (সংরক্ষিত)’ ক্যাটাগরীতে ১টির বিপরীতে ২টি মনোনয়নপত্র জমা পরে। যথাক্রমে (১) বিনা আক্তার ও (২) শিল্পী আক্তার।
৬টি ক্যাটাগরীতে ১০ (দশ) জনের বিপরীতে মোট ১৭ (সতেরো)টি মনোনয়নপত্র জমা পরে এবং জমাকৃত সকল মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত হয়।
অবশেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় স্মরণকালের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরী করে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বেশ কিছু পত্রিকার সংবাদকর্মীর সরব উপস্থিতিও ছিল চোখে পরার মতো। একটি উৎসবমূখর পরিবেশে খানেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। ভোট গ্রহণ শেষে সকল প্রার্থী অথবা তাদের প্রতিনিধি এজেন্টের সম্মুখে ব্যালট বাক্স খোলা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে গণনা করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন প্রিজাইডিং অফিসার।
ফলাফল নিম্নরূপঃ
** ক্যাটাগরী- প্রতিষ্ঠাতা
(১) মো. আসাদুজ্জামান প্রাপ্ত ভোট – বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় (নির্বাচিত)
** ক্যাটাগরী- দাতা
(১) সামসুদ্দিন আহমেদ প্রাপ্ত ভোট – বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় (নির্বাচিত)
** ক্যাটাগরী – শিক্ষক প্রতিনিধি (সাধারণ)
(মোট ভোটার ১১ জন, ভোট দিয়েছেন ১১ জন। শতকরা হার ১০০ ভাগ)
(১) আনিচুল হক রুবেল প্রাপ্ত ভোট – ০২
(২) চিত্তরঞ্জন মণ্ডল প্রাপ্ত ভোট – ০৯ (নির্বাচিত)
(৩) মোজাফ্ফর আহমেদ প্রাপ্ত ভোট – ০২
(৪) মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান প্রাপ্ত ভোট – ০৯ (নির্বাচিত)
** ক্যাটাগরী – শিক্ষক প্রতিনিধি (সংরক্ষিত)
(১) আফরোজা আক্তার প্রাপ্ত ভোট – বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় (নির্বাচিত)
** ক্যাটাগরী – অভিভাবক প্রতিনিধি (সাধারণ)
(মোট ভোটার ৪৩২ জন, ভোট দিয়েছেন ৩৮৩ জন। শতকরা হার ৮৮.৬৬ ভাগ)
(১) আব্দুল হোসেন প্রাপ্ত ভোট – ১১৮ (প্রদত্ত ভোটের ৩০.৮১%)
(২) আলমগীর হোসেন প্রাপ্ত ভোট – ২২৩ (প্রদত্ত ভোটের ৫৮.২২%) (নির্বাচিত)
(৩) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রাপ্ত ভোট – ২২২ (প্রদত্ত ভোটের ৫৭.৯৬%) (নির্বাচিত)
(৪) পরিমল চক্রবর্তী প্রাপ্ত ভোট – ১৪৬ (প্রদত্ত ভোটের ৩৮.১২%)
(৫) শেখ মাছুম প্রাপ্ত ভোট – ১৯৬ (প্রদত্ত ভোটের ৫১.১৭%) (নির্বাচিত)
(৬) মো. মিলন হোসেন প্রাপ্ত ভোট – ০৫০ (প্রদত্ত ভোটের ১৩.০৫%)
(৭) রেজাউল করিম প্রাপ্ত ভোট – ১৪৩ (প্রদত্ত ভোটের ৩৭.৩৪%)
(৮) শাহ্ আলম প্রাপ্ত ভোট – ১৬৬ (প্রদত্ত ভোটের ৪৩.৩৪%) (নির্বাচিত)
** ক্যাটাগরী – অভিভাবক প্রতিনিধি (সংরক্ষিত)
(১) বিনা আক্তার প্রাপ্ত ভোট – ১৬৯ (প্রদত্ত ভোটের ৪৪.১৩%)
(২) শিল্পী আক্তার প্রাপ্ত ভোট – ১৯২ (নির্বাচিত) (প্রদত্ত ভোটের ৫০.১৩%)
অভিভাবক ক্যাটাগরীর মোট ভোটার সংখ্যা ৪৩২ জন। তারমধ্যে ৩৮৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। অর্থাৎ শতকরা প্রায় ৮৯ ভাগ ভোট কাস্ট হয়। জাল ভোট ঠেকাতে ভোটারের ছবি সংযোজন করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে ভোট গ্রহণে পুরোপুরি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছিল। সর্বসাকুল্যে ১০ (দশ) জন সদস্য নির্বাচিত হন। এই দশ জনের দায়িত্ব পরবর্তী মেয়াদের জন্য একজন সভাপতি নির্বাচন করা। বিধি মোতাবেক সভাপতি নির্বাচনে সভাপতিত্ব করবেন প্রিজাইডিং অফিসার নিজে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বুধবার, সভাপতি নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়। স্থান নির্ধারণ করা হয় প্রিজাইডিং অফিসার তথা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়, নবাবগঞ্জ। সময় সকাল ১১:০০টা।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি, নির্ধারিত সভার সভাপতি মহোদয় বিদ্যালয়ের আগামী কমিটির সভাপতি নির্বাচনের লক্ষ্যে যোগ্য ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করার অনুরোধ করেন। বিদ্যালয়ের বিগত কমিটির সভাপতি আজীবন দাতা ও নির্বাচিত দাতা সদস্য সামসুদ্দিন আহমেদ সাহেব প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পদে নির্বাচিত মো. আসাদুজ্জামান সাহেবের নাম প্রস্তাব করেন।
প্রস্তাব করার পর পরই সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য পদে নির্বাচিত সদস্য শিল্পী আক্তার উক্ত প্রস্তাব সমর্থন করেন। সভায় আর কোন বিকল্প প্রস্তাব না হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এবং সর্বসম্মতিক্রমে প্রতিষ্ঠাতা তনয় এবং নির্বাচিত প্রতিষ্ঠাতা সদস্য (আসাদুজ্জামান) আগামী মেয়াদের জন্য খানেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন।