ঢাকার দোহার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলীর ভাতিজা বালু ব্যবসায়ী মিজান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সরকারি জমি বালু দিয়ে ভরাট করে জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, মিজান ও তার সহযোগীরা উপজেলার শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায় স্থানীয়দের ভোগদখলে থাকা খাস জমি জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে ভরাট করে অর্থ আদায় করেছে।
স্থানীয় শেখ সোরহাব, শেখ মজি, মহা মোল্লা, ছালাম শিকদার ও আলাল মোল্লাসহ বেশ কয়েকজনের নিকট থেকে জোর করে অর্থ আদায় করেন তারা।
পরে দোহার উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুন খান ভরাটকৃত খাস জমিটি উদ্ধার করেন এবং পাশে থাকা শ্রীকৃষ্ণপুর মৌজারও কিছু পরিমান খাস জমি উদ্ধার করে কুতুবপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির তত্বাবধানে দেন।
এদিকে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, জমি ভরাট না করলে নাকি মিজান ও তার সহযোগীরা এ জমি নিয়ে যাবে, এমন হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জমিটি ভরাট না করলে সরকার কখনোই এই জমি নিয়ে যেতো না।
জানা যায়, শুধু বালু দিয়ে ভরাট করে অর্থ আদায়ই নয়, ভরাটকৃত খাস জমি বিক্রি করেও মোটা অংকের টাকা নিয়ে আত্মগোপন করেছে মিজানের সহযোগী ইরফান মোল্লা। ইরফান স্থানীয় মৃত হাসেম মোল্লার ছেলে।
শেখ মজি নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, আমার কাছে টাকা ছিলো না। পরে মিজানের চাপে আমি আমার রিকশাটি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা মিজানকে দিয়েছি।
ভুক্তভোগী ছালাম শিকদারের স্ত্রী বলেন, মিজান বলেছে সরকার কে? টাকা দিবেন না কেন? দিতে হবে, না দিলে অপমান করা হবে আপনাদের।
ভুক্তভোগীরা আরো বলেন, সবাই গরীব মানুষ। আমাদের এ ক্ষতিপূরণগুলো কে দিয়ে যাবে? আমরা কার কাছে গেলে এই বিচার পাব? কেউ রিকশা বিক্রি করে টাকা দিয়েছে, কেউ আবার কিস্তি উঠিয়ে টাকা দিয়েছে। চেয়ারম্যান জনগণ বানিয়েছে। সেই চেয়ারম্যানই আমাদের ক্ষতি করছেন।
কুতুবপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জমিটি ভরাটের পূর্বে মিজানকে জানানো হয়েছে জমিটি নৌপুলিশ ফাঁড়ির নামে বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে, তাই তারা যেন জমিটি ভরাট না করে। তবুও মিজান ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমিটি ভরাট করেছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মিজানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি তার ভাতিজা মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগটি এড়িয়ে উল্টো কুতুবপুর নৌপুলিশ ফাঁড়িকে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুন খান বলেন, সরকারি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হচ্ছে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং সরকারি খাস জমিটি উদ্ধার করি।
তিনি আরো বলেন, কুসুমহাটি মৌজার ১৮নং এস এর ৬৬০,৬৬১ ও ৬৬৩ নং আরএস এর তিনটি দাগে মোট ৩৩ শতাংশ জমি উদ্ধারসহ পাশে থাকা আরো কিছু পরিমান জমি আমরা উদ্ধার করে নৌপুলিশ ফাঁড়ির তত্বাবধানে দিয়েছি।