ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৭তম আসরের পর্দা উঠতে আর সপ্তাহ খানেক সময় বাকি। এর আগে এই আসরের মিনি নিলামে ঝড় তুলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা। আগের ১৬ আসরে ওঠা ক্রিকেটারদের দামের সব রেকর্ড ভেঙে যায় এবার। যেখানে আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড গড়েন প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ক। এমন দাম ওঠার নেপথ্য কারণ হিসেবে নানা গুঞ্জন থাকলেও, নতুন কারণ জানালেন ভারতীয় কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার।
অজিদের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কামিন্সকে ২০ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে দলে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে সেই রেকর্ড ভেঙে দেন তারই স্বদেশি তারকা পেসার স্টার্ক। তার জন্য লড়াই করেছিল কলকাতা ও গুজরাট। শেষ পর্যন্ত ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে স্টার্ককে দলে ভিড়িয়েছে কলকাতা। যদিও স্টার্ক–কামিন্সদের এত দাম ওঠার ঘটনা মনোঃপুত হয়নি সাবেক ক্রিকেটারদের। তবে এবার সেরকম সমালোচনা নয়, উল্টো অজি ক্রিকেটারদের প্রশংসা ঝরেছে গাভাস্কারের কণ্ঠে।
তবে এমন প্রসঙ্গ ওঠে ভিন্ন কারণে, সাবেক ভারতীয় এই অধিনায়ক সমালোচনা করেছেন ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের। আর তা করতে গিয়ে আলোচনায় আসে কামিন্সদের দামের বিষয়টি। সম্প্রতি ভারতের মাটিতে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলেছে ইংল্যান্ড। সেখানে ইংলিশ ক্রিকেটাররা ভারতীয় সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন গাভাস্কার। তিনি বলেন, ‘ভারতের মাটিতে পা রেখে ওরা (ইংল্যান্ড দল) এমন এক হাবভাব করছিল, যেন দেখো আমরা তোমাদের হয়ে কত সুবিধা করে দিলাম, এরকম একটা মানসিকতা।’
এক কলামে গাভাস্কার আরও লিখেন, ‘ভারতীয় অফিসিয়ালদের কাজও হতবাক করেছে, তারাও এদেরকে দেখে গদগদ হয়ে বিমানবন্দরে যায় অভ্যর্থনা জানাতে। যেন ওরা আমাদেরকে আলাদা কোন সুবিধা দিচ্ছে। আমার তো মনে হয় অস্ট্রেলিয়া এরচেয়ে অনেক অনেক ভালো। ওরা কিন্তু আমাদের এখানে এসে আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের সংস্কৃতিকে সম্মান দেয়। আমাদেরকে অবজ্ঞা করে না। এটা অজিদেরকেও সাহায্য করে সোনার হাঁস (আইপিএল) চিনে নিতে। আইপিএল কিন্তু সেই বিরাট একটা সোনার হাঁস।’
একই কারণে অস্ট্রেলিয়রা আইপিএলে বেশি দাম পান বলেও মন্তব্য গাভাস্কারের, ‘অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা এই কারণেই (আইপিএলের নিলামে) অবিশ্বাস্য রকমের দাম পায়। যাদের কেভিন পিটারসেন অনেক সময়েই দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় গ্রেডের ক্রিকেটার বলে আখ্যা দিয়েছেন। এর পাশাপাশি অজি কোচ, ফিজিও, ট্রেনার এবং আরও অনেকে আইপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে কাজ করেন মোটা বেতনের বিনিময়ে। ফলে ঘরে (অস্ট্রেলিয়াতে) তারা যতটা রোজগার করতে পারে, তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোজগার তারা এখানে করে।’
আইপিএলে ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও কোচিং স্টাফ মিলিয়ে বড় একটা অস্ট্রেলিয়ান কাজ করেন। যা নিয়ে গাভাস্কার বলেন, ‘ধারাভাষ্যকারদেরও ভুললে চলবে না। আমার তো অনেক সময় মনে হয় যেন অস্ট্রেলিয়ান প্রিমিয়ার লিগ চলছে। অজিরা খুবই ভালোবাসার যোগ্য। তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ইংল্যান্ডের তুলনায় অনেক কম। আর সে কারণেই ভারতীয় এবং অস্ট্রেলিয়ান দলের মধ্যে ২২ গজে যে খারাপ সম্পর্ক ছিল, তা আগের চেয়ে অনেকটাই উন্নত হয়েছে। এখন এই খারাপ সম্পর্ক নেই বললেই চলে।’
উল্লেখ্য, ভারতের মাটিতে ইংল্যান্ড দলের সফর করার আগে রাধুনি নিয়ে নাটকীয়তা হয়েছিল, যা নিয়ে সমালোচনায়ও মেতেছিলেন বীরেন্দর শেবাগরা। এবার নতুন করে তাদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন গাভাস্কার। এই সিরিজের প্রথম টেস্টেই একমাত্র বেন স্টোকসের দল জয় পেয়েছিল। পরের চারটিতে তারা টানা পরাজিত হয়েছে।