স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝানো হয়েছিল। গণমানুষের শত্রু জামায়াত-বিএনপি আর জঙ্গিই এই নাশকতা করেছে। তারা অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমাদের ছাত্রলীগের অনেকেই শাহাদাত বরণ করেছে। তিনজন পুলিশ মারা গেছেন। একজন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
শনিবার (২৭ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি নূরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হক, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল প্রমুখ।
এর আগে হামলা অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ৯টি স্থান-স্থাপনা পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় একদল গুজব ছড়িয়েছে আরেক দল আক্রমণ করেছে। এমন ডেডিকেটেড ও সংঘবদ্ধ আক্রমণকারী একমাত্র বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিদের কাছে রয়েছে। আমরা তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণও পাচ্ছি তাদের সংঘবদ্ধ আক্রমণের।
তিনি আরও বলেন, একটি মহল সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন যে ৮ দফা দাবি দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তার মধ্যে যৌক্তিক দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে মেনে নেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারী তিনজনকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। কারা তাদের আক্রমণ করতে চায়, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লুট করা অস্ত্র এখন জঙ্গিরাই ব্যবহার করছে বলে দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জঙ্গিবাদ কায়েম করতেই সংঘবদ্ধভাবে অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটিয়েছে জঙ্গিরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য উচ্চ আদালতের রায়ে ৫ শতাংশ কোটা রয়েছে। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি তাদের সন্তানদের বয়স ৩০ এর ঊর্ধ্বে। সে হিসেবে এখন মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৮ শতাংশ। আমরা মনে করেছিলাম কোটা আন্দোলনকারীরা এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে আন্দোলন থেকে সরে যাবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য তারা সেটি করেনি। এতেই প্রমাণ হয় আন্দোলনকারীদের হাতে আন্দোলন ছিল না।
তিনি আরও বলেন, আক্রমণকারীদের প্রধান আক্রোশই ছিল পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের প্রতি। স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে যে পুলিশ তাদের উপর নির্মমভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদের দেশপ্রেমিক বিজিবির উপরও হামলা করা হয়েছে। আমাদের র্যাব, পুলিশ, বিজিবি যখন একত্রে পারছিল না তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি।
যাত্রাবাড়ীর পর মন্ত্রী ঘুরে দেখেন হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা, মাতুয়াইল তুষারধারা এলাকা, নারায়ণগঞ্জের পুড়ে যাওয়া হাসপাতালের ধ্বংসযজ্ঞ। হাসপাতালটিতে যখন আগুন দেয়া হয় তখন নবজাতক, মা ও রোগীদের আর্তচিৎকার শোনেনি দুর্বৃত্তরা। সে কথাই মন্ত্রীকে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সাইনবোর্ডের পিবিআই অফিসেও দেয়া হয় আগুন। সেখানেও যান মন্ত্রী। পরিদর্শন করেন ভাংচুর হওয়া জেলা পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশ লাইনস।