সিলেটের আদালতে মারধরের কারণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের অন্ডকোষ ফেটে গেছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
সেখানেই তার শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এ সময় সাবেক এই বিচারপতির শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়।
এদিকে আমাদের সময়ের হাতে আসা একপত্রে দেখা গেছে, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. মো. ইমদাদুল হক চৌধুরী স্বাক্ষর করে লিখেছেন ‘রোগী আনফিট’। সেখানে কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারেরও স্বাক্ষর রয়েছে।
সেই পত্রে লেখা আছে, ‘মিনিট নং- ১৯৭/২০২৪, হাজতি নং ৫২৩১/২৪, নাম- আবুল হোসেন মোহাম্মাদ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বয়স- ৭৪ বছর, পিতা- হাজী আব্দুল হাকিম চৌধুরী, রোগের নাম- Lacerated Scrotal injury (outside). তাকে জরুরী ভিত্তিতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যথাযথ কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে সতর্কতার সঙ্গে প্রেরণের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হলো।’
এ ব্যাপারে সিলেটের ডিআইজি (প্রিজন) মো. ছগির মিয়া বলেন, ‘সাবেক বিচারপতি মানিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মারধরে তার শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়েছে। একটি অণ্ডকোশ ফেটে গেছে। হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তার চিকিৎসা চলছে।’
সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. জলিল কায়সার খোকন বলেন, ‘মারধরের কারণে সাবেক বিচারপতি মানিকের অন্ডকোষ ফেটে গেছে। পরে তা অপারেশন করা হয়। একই সঙ্গে তার শরীরে অনেক জখম ও কাটাছেঁড়া আছে। সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনী ও পুলিশ সাবেক বিচারপতির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। হাসপাতাল এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’
এর আগে বিকালে পুলিশের পাহারায় বিচারপতি মানিককে আদালতে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর পরপরই কিল-ঘুষি মারার ঘটনা ঘটে। তাকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয় জুতা, ডিম ও পানির বোতল। এতে গুরুতর আহত হন তিনি।
বিকাল সাড়ে ৪টায় শুনানি শেষে শামসুদ্দিন মানিককে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আদালতের বিচারক আলমগীর হোসেন কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পাহারায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
আদালতে শুনানিকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না বলে পুলিশ জানায়।