নির্বাচন কমিশনকে পাঁচটি বিষয় অবহিত করলো আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর বিএনপি হামলা করছে এমন অভিযোগসহ কমিশনকে পাঁচটি বিষয়ে অবহিত করেছে আওয়ামী লীগ। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে গিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে দেখা করে এসব বিষয় অবহিত করেন। পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন এইচ টি ইমাম।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যন বলেন, ‘আমরা যে পাঁচটি বিষয় কমিশনকে অবহিত করেছি তা হলো— প্রথমত, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর বিএনপি হামলা করছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপার ব্যাপকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদের যারা আক্রান্ত হয়েছে, যেসব স্থানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছ, সেগুলো কমিশনকে জানিয়েছি। কমিশনের কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়েছি। আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বারবার আক্রমণের শিকার হচ্ছে। আমরা কাউকে আক্রমণ করি না। কিন্তু একটি বিষয় লক্ষ করছি, উল্টো বিএনপি ও জামায়াত পন্থীরা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। এজন্য আমাদের ওপর যে হামলা হচ্ছে, তা কমিশনকে জানানোর জন্য এখানে এসেছি।’

‘দ্বিতীয়ত, আচরণ বিধি মেনে চলার প্রসঙ্গে আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা নির্বাচনি প্রচারণার শুরু থেকে সরকারি কোনও কিছু ব্যবহার করছি না। দল ও সরকারের পার্থক্য বজায় রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকসহ সবাইকে এই আচরণ বিধি সম্পর্কে শুরু থেকে অবহিত করে রেখেছি এবং তারা সেটি মেনে চলছেন।’

‘তৃতীয়ত,জামায়াতের প্রার্থীদের বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। জামায়াতের প্রার্থীদের যে তালিকা রয়েছে, এ ব্যাপারে নিষ্পত্তি করার জন্য কমিশনকে বলা হয়েছে। আমরা কমিশনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কারণ তারা হলফ নামায় ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তারা হলফ নামায় ধানের শীষের প্রার্থী বলে দাবি করলেও বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, তারা জামায়াতের প্রার্থী। তাদের প্রার্থীতা বাতিলের জন্য আমরা কমিশনকে অনুরোধ করেছি।’

‘চতুর্থত,নির্বাচনি পোস্টারে ছবির ব্যবহার নিয়ে আমরা কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা নির্বাচনি আচরণ বিধি অনুযায়ী দলীয় প্রধানের ও প্রার্থীর ছবি ছাড়া অন্য কারও ছবি ব্যবহার করছি না। এমনকি বঙ্গবন্ধুর ছবিও ব্যবহার করা হচ্ছে না। কিন্তু বিএনপি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার করছে। তারা দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, এর মধ্যে তারেক রহমান পলাতক। দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক ব্যক্তির ছবি পোস্টারে ব্যবহার করা আইনসঙ্গত কিনা সে ব্যাপারে কমিশনকে জানিয়েছি।’

‘পঞ্চমত, নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়ে আমরা কথা বলেছি। ১১৮টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আমাদের মারাত্মক আপত্তি আছে। এগুলো পারিবারিক ও পক্ষপাতমূলক। এর একটি হলো—খান ফাউন্ডেশন, যেটি বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন খান পরিচালনা করেন। দ্বিতীয়টি হলো—ডেমোক্রেসি ওয়াশ, যার পরিচালক শফিক রেহমান,  তৃতীয়টি লাইট হাউস, প্রতিষ্ঠাতা তারেক রহমান। চতুর্থটির পরিচলক আদিলুর রহমান। এগুলো দলীয়ভাবে প্রভাবিত ব্যক্তিরা পরিচলনা করে থাকেন। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, এসব প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রের ভেতর গিয়ে প্রভাবিত করে।’

পুলিশের অনেক কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘ওসি থেকে আইজিপি পর্যন্ত সবাই নির্বাচন কমিশনের অধীনে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা তদন্ত করে কমিশন ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment