অর্থের বিনিময়ে অশ্লীল ভিডিও চ্যাটিং, নারীসহ গ্রেপ্তার ৩

অনলাইনে অর্থের বিনিময়ে অশ্লীল ভিডিও চ্যাটিং চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। রাজশাহীতে চক্রটির দুই নারী সদস্যসহ তিনজনকে চ্যাটিংরত অবস্থায় আটক করা হয়েছে।

গত বুধবার রাত ১১টার দিকে জেলার গোদাগাড়ী পৌরসভার মেডিকেল মোড় এলাকার ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এই তিনজনকে আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- নাটোর জেলার আলাইপুরের মেহেদী হাসান (২৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গার হাবিবা খাতুন (১৭) ও একই উপজেলার দুর্গাপুরের মোছা. সুরভী বেগম (১৮)।

পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন অপারেটরের ৩৫টি সিমের নম্বর ইন্টারনেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন আটক তিনজন। সেখানে আগ্রহীদের কল করতে যৌন আকর্ষণমূলক ছবি ও ছোট ভিডিও টিজার পোস্ট করেন তারা। কল করার পর বিকাশে টাকা পাঠানোর কথা বলতেন তারা। টাকা পাঠিয়ে কল করলেই অশ্লীল ভিডিও চ্যাট শুরু করতেন তারা।

ভাইবার, ইমো, ম্যাসেঞ্জারসহ বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় ভিডিও চ্যাটিং করে থাকে চক্রটি। এমনকি বিভিন্ন বিদেশি সাইটে যুক্ত হয়ে নগ্ন ভিডিও চ্যাট করতেন তারা। বহরে লোক বাড়াতে মোটা অঙ্কের বেতনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছিল চক্রটি।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবদুর রাজ্জাক জানান, তিন মাস আগে মেহেদী হাসান এবং ওই দুই নারী গোদাগাড়ী পৌরসভার মেডিকেল মোড় এলাকার মজিবুর রহমান মাস্টারের বাড়িতে দুটি কক্ষ ভাড়া নেন। কিন্তু বাড়িতে ওঠার পর তারা বাইরে বের হতেন না। আশেপাশের মানুষের সঙ্গেও মিশতেন না তারা।

তারা দুটি কক্ষে ওয়াইফাই নেট কানেকশন নিয়েছিলেন। এতে সন্দেহ হওয়ায় এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ বুধবার রাতে ওই বাড়িতে অভিযান চালায়।

সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা সেখানে গিয়ে তাদেরকে অশ্লীল ভিডিও চ্যাটিং করা অবস্থায় হাতেনাতে ধরেছি। তাদের কাছে থাকা দুটি ল্যাপটপ, একটি কম্পিউটার, বিভিন্ন কোম্পানির ৩৫টি সিম কার্ড, ২৫টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা শুধু ভিডিওতেই নয়, ইন্টারনেটে নম্বর ছড়িয়ে ফোনে অশ্লীল কথাবার্তা বলে মানুষের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিতো। এ ছাড়া বিভিন্ন বিদেশি সাইটে তারা ঘণ্টা অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক নগ্ন চ্যাটিং করতো।’

‘তারা নতুন করে চ্যাটিং জবের জন্য সুন্দরি নারী খুঁজতে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে। যাতে দিনে ১০ ঘণ্টা ভিডিও চ্যাটিংয়ের বিনিময়ে মাসে ২৩ হাজার ৮০০ টাকা বেতন দেওয়ার লোভনীয় অফার দেওয়া হয়েছে। যার কয়েক কপি ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে,’ বলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

ওই তিন জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment