‘আত্মহত্যা’ করলেন এসআই, ওসিকে দায়ী করলেন মেয়ে

সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদীপ বড়ুয়ার (৪৫) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ গোয়ানাঘাট ওসি’র  দুর্ব্যবহারের কারণে আত্মহত্যা করেন সুদীপ। যদিও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রোববার (২ জুন) বিকেলে থানার অভ্যন্তরের কোয়ার্টার থেকে সুদীপের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

জানা গেছে, সুদীপ বড়ুয়া চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সোনাইচড়ির মৃত রবীন্দ্র লাল বড়ুয়ার ছেলে। তার এক ছেলে নৌবাহিনীর স্কুলে এবং মেয়ে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। ২৮ বছর ধরে পুলিশে চাকরি করছেন তিনি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি গোয়াইনঘাট থানায় যোগদান করেন।

সুদীপের মেয়ে শতাব্দি বড়ুয়া বলেন, ‘বাবা প্রায়ই ফোন করে বলতেন, গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের ওসি দুর্ব্যবহার করেন। দিনরাত চাপের মধ্যে রাখেন। সর্বশেষ শনিবারও বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি তখনও বলেছেন, এ থানায় তিনি আর থাকতে চান না।’

মানসিক বিপর্যয় থেকেই সুদীপ বড়ুয়া আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ মেয়ের।

তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোয়ানঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল বলেন, ‘এ অভিযোগ ঠিক নয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা তদন্ত করে দেখা হবে।’

গোয়ানঘাট থানা পুলিশের ডিউটি অফিসার সালাউদ্দিন জানান, রোববাার দুপুর ২টা পর্যন্ত থানায় ছিলেন সুদীপ বড়ুয়া। এরপর থানা এলাকায় নিজের বাসায় যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পর তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, রোববার দুপুরের দিকে এসআই সুদীপের স্ত্রী তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দিয়েও কোন সাড়া পাননি। কয়েকবার ফোন দেয়ার পরও ফোন রিসিভ না করায় একপর্যায়ে থানার কম্পিউটার অপারেটর অজয়কে ফোন দেন তিনি। অজয় মোবাইল ফোন নিয়ে থানা কোয়ার্টারের দোতলায় এসআই সুদীপের কক্ষে গেলে তিনি সেখানে সুদীপকে জানালার গ্রীলের সাথে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পান।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সিলেটের পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান (পিপিএম), গোয়াইনঘাটের ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মাহবুব আলম, গোয়াইনঘাটের সার্কেল এএসপি নজরুল ইসলাম ও থানার ওসি আব্দুল জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে তাদের উপস্থিতিতেই লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।

আপনি আরও পড়তে পারেন