মার্কিন ইন্ধনে ইরানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে যুক্তরাজ্য

আরব উপসাগরে সংঘাতময় দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাজ্য। কূটনৈতিকভাবে। এবং সামরিকভাবেও। এবং ব্রিটেন ‘অযথা’ এই সংঘাতজালে জড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনে। ওয়াশিংটনের অনুরোধে পারস্য জলসীমায় ইরানের তেলবাহী একটি ট্যাংকার জব্দ করে লন্ডন এখন মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কাকে বাড়িয়ে দিয়েছে; যোগ-নিজেও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে।

২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা সিদ্ধান্তে সরে যাওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার পুরনো দ্বন্দ্ব আরও বাড়তে থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে সরে গিয়ে তেহরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে ওয়াশিংটন। গত মাসের শেষ দিকে নতুন করে আরও গুরুতর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

গত দুই মাসে ইরানের উপকূলে হরমুজ প্রণালিতে দুই দফায় ছয়টি তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ওয়াশিংটনের দাবি, এসব হামলা চালিয়েছে তেহরান, যারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এরই মধ্যে ১৮ জুন ওই প্রণালিতে মার্কিন ড্রোন গুলি করে বিধ্বস্ত করে ইরান।

এর পরই উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে। ওয়াশিংটন-তেহরান উত্তেজনার মধ্যেই গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসনের অনুরোধে ইরানের তেলবাহী ট্যাংকার আটক করে ব্রিটিশ নৌসেনারা। জিবরাল্টার প্রণালি হয়ে ওই ট্যাংকার তেল নিয়ে যাচ্ছিল সিরিয়ায়।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, সিরিয়ায় ইরানের তেল চালান অবৈধ; সে কারণে ব্রিটেন এমন চালান আটকে দিতেই পারে। গ্রেস ১ নামের ওই ট্যাংকার না পৌঁছলেও সিরিয়ার কোনো ক্ষতি কিন্তু হয়নি। কারণ তারা রাশিয়া থেকে প্রয়োজনে তেল আমদানি করবে। কিন্তু ট্যাংকারটি আটকে দিয়ে ওয়াশিংটন-তেহরান যুদ্ধের মধ্যে জড়িয়ে পড়ল লন্ডন। তেহরান নিশ্চয়ই ছাড় দেবে না।

বিশেষত তার দেউড়িতে এসে কেউ নীতিজ্ঞান শেখাবে কিংবা ‘জুলুম’ বা মোড়লগিরি করবে-এমন খবরদারি রুখে দেওয়ার জন্য ইরান এরই মধ্যে হুশিয়ারি দিয়েছে। এমনকি এই সপ্তাহেই ব্রিটিশ তেলবাহী একটি ট্যাংকারকে জব্দ করার চেষ্টা করেছে বলে ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে ব্রিটেন। লন্ডনের এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও তেহরান সতর্ক করেছে, অবধারিতভাবেই এমন ঘটনা সামনে ঘটতে যাচ্ছে।

তারা বিদেশি সব শক্তিকে তাদের জলসীমার আশপাশ থেকে সরে যেতে বলেছে। যেহেতু এখনো পারমাণবিক চুক্তি রক্ষা করা সম্ভব, ফ্রান্স বা জার্মানির মতে ব্রিটেনেরও উচিত ইরানের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখা। তারা সেটা করছেও। কিন্তু একই সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব এবং যুদ্ধে উসকানি-এই আচরণ প্রতিবিপরীত এবং ফলও হতে পারে হিতে বিপরীত।

আপনি আরও পড়তে পারেন