ছেলেধরা সন্দেহে নারী হত্যা, ৫শ’ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে একটি স্কুলে গণপিটুনিতে মানসিক অসুস্থ এক নারী নিহত হওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে।

শনিবা (২০ জুলাই) রাতে বাড্ডা থানায় নিহতের ভাগিনা নাসির উদ্দিন এ মামলা করেন।

মামলায় বলা হয়েছে, অতর্কিতভাবে ওই নারীকে স্কুলের অভিভাবক, উৎসুক জনতাসহ অনেকে গণপিটুনি দেয়। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি জড়িত।

পুলিশের বাড্ডা থানার ডিউটি অফিসার এসআই মাসুদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার বাদী নিহতের ভাগিনা নাসির উদ্দিন। বাড্ডা থানার এসআই সোহরাব হোসেনকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এর আগে শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিহত নারীর মরদেহ শনাক্ত করেন তার ভাগনে ও বোন রেহানা। তারা জানান, নিহত নারীর নাম তসলিমা বেগম রেনু। ১১ বছরের এক ছেলে ও চার বছর বয়সী এক মেয়ের মা তিনি। আড়াই বছর আগে তার স্বামী তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে ছেলে আল মাহির ও মেয়ে তসলিমকে নিয়ে মহাখালী ওয়ারলেস এলাকায় একটি বাড়িতে থাকতেন তিনি।

নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, রেনু মানসিক রোগে ভুগছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তার চার বছর বয়সী মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য তিনি এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে ঘুরছিলেন। এ কারণেই হয়তো শনিবার তিনি বাড্ডার ওই স্কুলটিতে যান।

বাড্ডা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রেনু তার মেয়েকে ভর্তি করার জন্য স্কুলে যান। কিন্তু মানসিক অসুস্থতার কারণে তার আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। এজন্য স্কুলের অনেকেই তাকে ছেলেধরা হিসেবে সন্দেহ করছিল। পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার সঙ্গে কথা বলার জন্য নিজের রুমে নিয়ে যান। কিন্তু স্কুল প্রাঙ্গণে তার অস্বাভাবিকতা দেখে অনেকেই বের করে মারধর করতে চাইছিল। প্রধান শিক্ষক রেনুকে বাইরে বের করে দিচ্ছেন না কেনো, এ জন্য তারা হৈ হুল্লোড় করছিলেন। এসময় প্রধান শিক্ষক তাকে বাইরে বের না করলেও স্কুলের কিছু অভিভাবক ও বাইরে থেকে আসা উৎসুক জনতা তার রুমের গেট ভেঙে রেনুকে ছেলেধরা বলে বের করে নিয়ে মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হন রেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন