আত্মরক্ষার জন্য আমাদের যা প্রয়োজন তাই করব: ভিপি নুর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর বলেছেন, আমাদের গায়ে আঘাত লাগার আগ পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণ থাকব, তবে আগাত আসলে আমরা অবশ্যই আত্মরক্ষার জন্য যা করার প্রয়োজন তাই করব।

আজ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে ঢাবির ক্যাম্পাস ও এর আশেপাশের এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল শেষ শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন ভিপি নুর।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ভারতের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএবি) বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করতে গিয়ে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চের হামলার শিকার হন ভিপি নুরসহ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের ৭-৮ জন নেতাকর্মী।

এই হামলায় প্রতিবাদে এবং ভারতে আন্দোলনরতদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ আজ দুপুরে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।

এসময় ভিপি নুর বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি হয়ে গতকালকে যে বিক্ষোভ মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেছি সেখানে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নামে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের উপরে অতর্কিত হামলা করেছে। আজকেও তারা প্রকাশ্যে রড, রাম দা, লাঠি সোটা নিয়ে শোডাউন দিয়েছে এমনকি কয়েকজনের কাছে অস্ত্রও দেখা গেছে।

“যারা অছাত্র ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এসে অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ায় তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয় না, অথচ নির্বাচিত ভিপির সমাবেশ করতে তারা নিষেধ করে।”

বাংলাদেশকে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য করার চক্তান্ত চলছে মন্তব্য করে নুরুল হক নুর বলেন, ভারতের মোদি সরকার সাম্প্রদায়িক কর্মকান্ডের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তারা সৃষ্টি করতে চায়, যার মাধ্যমে এখানকার ক্ষমতা দখল করা যায়।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে কোনো এলিট শ্রেণীর রক্তে নয়। এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, জনতাই স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এই ছাত্র সমাজ, তৎকালীন ডাকসুর ভিপি আ.স.ম. আব্দুর রব ভাই তখন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।

এসময় ডাকসু সহ-সভাপতি বলেন, রাষ্ট্র এখন একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে রাষ্ট্র নিজেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে মদদ দিচ্ছে। তাদের রয়েছে পেটুয়া বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনী ও যুবলীগের হাতুড়ি বাহিনী।

“এই দেশে তারা যা ইচ্ছে তাই করে যাবে। তাদের মতের সাথে না মিললেই দেশের সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবরারের মত শিক্ষার্থীরা লাশ হবে সেটা কখনোই হতে দেওয়া যায় না।”

তিনি বলেন, আজকে আমরা যেখানেই প্রতিবাদ করিনা কেন প্রতিটি প্রতিবাদগুলোতে পুলিশ কিংবা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলার স্বীকার হই। যদি এই দেশের সচেতন জনগণ আমাদের পাশে না দাঁড়ান তাহলে হয়তো আমরা একসময় নাই হয়ে যাব।

“কোনো রাজনৈতিক বা কোনো সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়, অন্যায়ের প্রতিবাদে আমরা রাজপথে আছি। আমরা দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য কথা বলছি” যোগ করেন নুরুল হক নুর।

আপনি আরও পড়তে পারেন