স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্টের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়েছে ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের বিপক্ষে। ভারতের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আওরঙ্গবাদের এক ট্রাভেল এজেন্ট আজহারউদ্দিন এবং আরও দুজন ব্যক্তির বিপক্ষে প্রায় ২১ লাখ রুপি প্রতারণার মামলা করেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা দাঁড়ায় প্রায় ২৫ লাখ টাকা।
মহারাষ্ট্রের শহর আওরঙ্গবাদের সিটি চক পুলিশ স্টেশন মামলাটির তদন্ত করছে। সেখানকার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিএসআই অমরনাথ ডি নাগরে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতের সাবেক ক্রিকেটার আজহারউদ্দিন এবং আরও দুই ব্যক্তির বিপক্ষে প্রতারণার মামলা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। আদালতে বকেয়া পরিশোধ করলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে খালাস পাবেন। নইলে তিনজনকেই আটক করা হবে।’
পুলিশ জানিয়েছে, হায়দরাবাদ থেকে আজহারউদ্দিন, কেরালা থেকে সুধেশ আভিক্কাল ও আওরঙ্গবাদের মুজিব খানের (আজহারউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী) বিপক্ষে প্রতারণার মামলা করেছেন দানিশ ট্যুরসের মালিক শাহাব ওয়াই মোহাম্মদ। ভারতের অধুনালুপ্ত জেট ওয়ারওয়েজের সাবেক নির্বাহী ছিলেন শাহাব। সংবাদমাধ্যমকে শাহাব জানান, গত বছরের ৯ থেকে ১২ নভেম্বরের মধ্যে আভিক্কাল বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বুকিং দেন কয়েকজনের নামে। ফ্লাইটগুলো ছিল মুম্বাই-দুবাই-প্যারিস, প্যারিস-তুরিন, তুরিন-প্যারিস, তুরিন-মিউনিখ-আমস্টারডাম, প্যারিস-দুবাই-দিল্লি ইত্যাদি। আজহারউদ্দিন ও আভিক্কাল বুকিং দেওয়া ফ্লাইটে ভ্রমণ করে প্যারিসে আরও তিনজনের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে তারা ভালো মানের কিছু এয়ারলাইনসে বিজনেস ক্লাসে ফ্লাইট বুকিং দেন। এসব বুকিং দেওয়া ফ্লাইটের টিকিটের মূল্য প্রায় ২০ লাখ ৯৬ হাজার রুপি।
শাহাবের অভিযোগ, টিকিটের দাম অনলাইনের পরিশোধের প্রতিশ্রুতি কয়েকবার দেওয়া হলেও তিনি কোনো অর্থ পাননি। শাহাব আরও জানান, টাকা চাইলে আভিক্কাল তাঁকে মেইলে জানান, ক্রোয়েশিয়ান ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে তাঁর একাউন্টে ১০ লাখ ৬০ হাজার রুপির সমপরিমাণ ইউরো পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনো অর্থ তিনি পাননি। এ নিয়ে শাহাবের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিড-ডে, ‘মুজিব খানকে আমি অনেক বছর ধরেই চিনি। সে আজহারউদ্দিনের জন্য বিমান টিকিট বুকিং দিয়ে থাকে। এবার সে আজহারউদ্দিন ও আভিক্কালের জন্য ইউরোপে দুটো বিমান টিকিট বুকিং দেয়। মুম্বাই থেকে দুবাই হয়ে প্যারিসে গিয়েছে এবং ১২ নভেম্বর দিল্লি হয়ে মুম্বাইয়ে ফিরে এসেছে। টিকিটগুলোর মোট মূল্য ২০ লাখ ৯৬ হাজার রুপি। টাকাটা পাওয়ার নিশ্চয়তা আমি পেয়েছিলাম। পরে মেইলে জানানো হয় ক্রোয়েশিয়ান ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে আমার হিসাব নম্বরে ৫০ শতাংশ অর্থ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জেনেছি ব্যাংক থেকে আমার হিসাব নম্বরে কোনো টাকা পাঠানো হয়নি।’
এদিকে আজহারউদ্দিন নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে এক ভিডিওবার্তার মাধ্যমে অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন, ‘আওরঙ্গবাদে আমার বিপক্ষে মামলাটি ভিত্তিহীন। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে আমি দ্রুতই ব্যবস্থা নেব।’ আজহারউদ্দিন ভারতের হয়ে ৯৯ টেস্ট ও ৩৩৪ ওয়ানডে খেলেছেন।