বিদেশে ড্যান্সবারে নারী পাচারকারী চক্রের ৮ সদস্য গ্রেফতার, ২ তরুণী উদ্ধার

বিদেশে ড্যান্সবারে উচ্চ বেতনে চাকুরির প্রলোভনে ঢাকা নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার সহশ্রাধিক তরুণী ও নারীকে পাচারের অভিযোগে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের আরও আট সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ট্রাভেল এজেন্সি ও নাচের প্রশিক্ষণকেন্দ্র ড্যান্সক্লাবের মালিকও রয়েছেন।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র‌্যাব-১১ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানানো হয়।

এর আগে রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর, কেরাণীগঞ্জ ও মুগদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই নারীকে উদ্ধারসহ আটজনকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে নারীদের বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট, ভিসার ফটোকপি ও নথিপত্রসহ পাচারের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রাজধানীর কাকরাইল এলাকার ধানসিঁড়ি ট্রাভেল এজন্সির মালিক শাহাবুদ্দিন, নারায়ণগঞ্জের একটি অখ্যাত নাচের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মালিক রিজভী হোসেন অপু, পাচারকারী চক্রের এজেন্ট হৃদয় আহম্মেদ কুদ্দুস, মামুন, স্বপন হোসেন, শিপন, মুসা ও নারী সদস্য শিল্পী আক্তার। এসময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৩৯টি নারী পাসেপোর্ট, ৬৬টি পাসপোর্টের ফটোকপি, ৩৬টি ভিসার ফটোকপি, ১৮টি বিমানের টিকিটের ফটোকপি, ১টি সিপিইও, ১৯টি মোবাইল ফোন জব্দ করে র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আলেপ উদ্দিন জানান, ইতিপূর্বে নারী পাচারকারী চক্রের ছয়জন র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হওয়ায় আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর নজর এড়াতে অন্যান্য সদস্যরা পাচারের কৌশল পরিবর্তন করে ফেলে। সরাসরি দুবাই ও মালয়েশিয়া পাচার না করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার শুরু করে তার। এই চক্রটি দেশের বিভিন্ন পোশাক কারখানার নিম্নবিত্ত সুন্দরী নারী শ্রমিক, তালাকপ্রাপ্ত ও পারিবারিক সমস্যার শিকার তরুণীদেরকে টার্গেট করে নাচ শিখিয়ে বিদেশে ডান্সবারে উচ্চ বেতনে চাকরি দেবার নামে ফাঁদে ফেলে পাচার করে থাকে। এই পাচারের মূল হোতারা হচ্ছেন বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির মালিক। তাদের সহায়তা করে থাকেন দেশের বিভিন্ন নাচের প্রশিক্ষণকেন্দ্র ডান্সক্লাবের মালিক ও প্রশিক্ষকরা। গত দেড় বছরে এই চক্রটি পনের থেকে পঁচিশ বছর বয়সের সহশ্রাধিক তরুণীকে বিদেশে পাচার করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

তিনি জানান, সম্প্রতি র‌্যাবের গোয়েন্দ নজরদারিতে বিষয়টি ধরা পড়লে পাচারকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেফতার ও তাদের হেফাজত থেকে পাচারের প্রক্রিয়াধীন দুই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।

আলেপ উদ্দিন আরও জানান, গ্রেফতারকৃতরা প্রত্যেকেই পূর্বের মামলার পলাতক আসামি। তাদেরকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতারের পর তারা নারী পাচারের অভিযোগ স্বীকার করে র‌্যাবকে তারা এই সংক্রান্ত সব ধরণের তথ্য প্রদান করেছে।

এর আগে গত ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো এলাকা থেকে ডান্সবারে নারী পাচারকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতারসহ পাচারের শিকার চার তরুণীকে উদ্ধার করে র‌্যাব। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে বিদেশে ড্যান্সবারে চাকরির প্রলোভনে অভিনব কৌশলে সহশ্রাধিক তরুণী পাচারের চা ল্যকর বিস্তর তথ্য।

 

 

 

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন