ওয়াজের নামে রাজনৈতিক মোল্লারা ধর্মের মনগড়া ব্যাখ্যা দিচ্ছে : ইনু

নারী-বিদ্বেষী ওয়াজ মাহফিল বন্ধের দাবি জানিয়ে জাসদের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘সারাদেশে ওয়াজের নামে রাজনৈতিক মোল্লারা ধর্মের মনগড়া ব্যাখ্যা দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর তুলনা করে সাঈদীকে আল্লাহর প্রিয় মানুষ উল্লেখ করে মুক্তির দাবি করা হচ্ছে। ওয়াজে তেঁতুলতত্ত্ব প্রচার করা হচ্ছে। নারীদের ঘর থেকে বের হওয়া, চাকরি, কাজ ও লেখাপড়ার বিরুদ্ধে কথা বলাই এসব রাজনৈতিক ওয়াজের মূল বিষয়।’

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশন তৈরি করে দিয়ে গেছেন। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ-স্কুল-মাদরাসাগুলোতে ইসলামি শিক্ষা, ইসলামের ইতিহাস পড়ানো হচ্ছে। দেশে মাদরাসা বোর্ডও রয়েছে।’ এই রাজনৈতিক মোল্লারা, ফতোয়াবাজরা ও ধর্ম ব্যবসায়ীরা কি ইসলামি শিক্ষা, মাদরাসা বোর্ড, কওমি মাদরাসা বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে যে সিলেবাস পড়ানো হয় সে অনুযায়ী ভাষণ দেয় কি-না প্রশ্ন করেন তিনি। এসব নারী-বিদ্বেষী ওয়াজ মাহফিল মনিটরিংয়ের দাবি জানান ইনু।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাস নিয়ে বিতর্কের অবসান দাবি করে ইনু বলেন, ‘পাকিস্তান পন্থার রাজনীতি তথা সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গিবাদী এবং সন্ত্রাসবাদী ও তাদের পৃষ্ঠপোষক জামায়াত-বিএনপিকে রাজনীতির মাঠ থেকে চিরতরে বিদায় করতে হবে। দেশবিরোধী শক্তির প্রতি কোনো নমনীয়তা বা ছাড় দেয়া যাবে না। ইতিহাস প্রমাণ করে জামায়াত বিএনপি সুযোগ পেলেই গণতন্ত্রের পিঠে ছোবল হানে। বিএনপি জামায়াত সাম্প্রদায়িক-জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ উৎপাদনের কারখানা। এ কারখানা চিরতরে বন্ধ করতে হবে। এটা রাজনৈতিক বিদ্বেষ নয়, রাজনৈতিক বাস্তবতা।’

ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের ফলাফল বর্জন করে বিএনপি যে হরতালের ডাক দিয়েছে এটিকে বিএনপির ভুল ও ব্যর্থ রাজনীতি ও মুখ রক্ষা ইতিহাস বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘দেশে দুর্নীতি না হলে আরও অনেক এগিয়ে যেত। দুর্নীতির দুষ্টচক্র আমাদের জন্য অভিশাপ, বিরাট চ্যালেঞ্জ। উন্নয়নের সুফল খেয়ে ফেলা উইপোকা আর ইঁদুরগুলোকে বিষ দিয়ে মারতে হবে। দুর্নীতির দুষ্টচক্রকে ধ্বংস করতে হবে। ক্ষমতার অপব্যবহারকারী-দুর্নীতিবাজরা ধরাছোঁয়ার বাইরে না তা প্রমাণ করতে হবে। ব্যাংক লুটেরা-শেয়ারবাজার লুটেরারাও ধরাছোঁয়ার বাইরে না তা প্রমাণ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ঝিকে মেরে বৌকে শেখানোর চেষ্টায় লাভ হচ্ছে না। তারা শিখবে না। দুর্নীতিবাজ বেগম ও সাহেবদের ধরতে হবে। মুজিব বাঙালির সোনার খনি, এর মধ্যে বাঙালির সকল মূল্যবান সোনা-দানা ও মনিমুক্তা লুকিয়ে আছে।’ মুজিববর্ষে তা বের করে আনার আহ্বান জানান তিনি।

ইনু বলেন, ‘বিএসএফ দ্বারা সীমান্তে হত্যার পক্ষে সাফাই গাওয়া ঠিক হবে না। বিএসএফ আসল বুলেট ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করছে। এটা সরকারের দেখা দরকার।’ ধর্ষকদের ক্রস ফায়ারে দেয়ার মন্তব্যের বিরোধিতা করে আইন কঠোর করা দাবি জানান তিনি।

আপনি আরও পড়তে পারেন