সিলেটে এক লিভারে দুই শিশুর জন্ম!

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক লিভার নিয়ে জন্ম নিয়েছে জোড়া লাগানো দুই শিশু। অন্যান্য সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আলাদা হলেও জোড়া লাগা দুই কন্যা শিশুর লিভার একটি।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট-এনআইসিইউ না থাকায় জোড়ালাগা শিশু দুটিকে আলাদা করা সম্ভব হয়নি। ফলে তাদেরকে পাঠানো হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় শিশু দুটিকে আলাদা করার চিকিৎসা ব্যয়ের জন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন জোড়া লাগা শিশুর কৃষক পরিবার।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের কৃষক হাফেজ মামুনুর রশিদের স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো দুটি কন্যা শিশুর জন্ম হয়।

জন্মের পর থেকে গত এক সপ্তাহ শিশু দুটিকে রাখা হয় হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের ইনকুভেটরে। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন যে শিশু দুটির সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক ও আলাদা থাকলেও, একটি লিভার নিয়েই জন্ম নিয়েছে তারা।

হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. নূরুল আলম জানান, এর আগেও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এরকম জোড়া লাগা শিশুর জন্ম হয়েছে। গত ২৫ জানুয়ারি জন্ম নেয়া কন্যাশিশু দুটি ভালো আছে। মাঝে মধ্যে শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় তাদেরকে ইনকুভেটরের মধ্যে রাখা হয়েছে। শিশু দুটির কিডনি, হার্ট ও ফুসফুস আলাদা রয়েছে। শুধুমাত্র লিভার একটি। তবে অপারেশনের মাধ্যমে লিভারটি কেটে শিশু দুটির মধ্যে প্রতিস্থাপন করে তাদেরকে আলাদা করা সম্ভব।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান জানান, শিশু দুটির অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন। অস্ত্রোপচারের পর এনআইসিইউ সার্পোটের প্রয়োজনও পড়তে পারে। কিন্তু ওসমানী হাসপাতালে এখনও এনআইসিইউ চালু না হওয়ায় শিশু দুটিকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই শিশু ও তাদের মায়ের স্বাস্থ্যের বিশেষ নজর রাখছে এবং তাদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করছে

বলেও জানান তিনি।

ওসমানী হাসপাতালে শিশু দুটির পাশে থাকা তাদের দাদা শওকত আলী বলেন, প্রথমে জোড়া লাগানো মেয়ে জন্ম নেয়ায় আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে ভয়ের কিছু নেই বলে এখানকার চিকিৎসকরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এখন পরিবারের সকলেই খুশি।

তিনি বলেন, আমার ছেলে দরিদ্র কৃষক। তার পক্ষে ঢাকায় নিয়ে মেয়েদের অস্ত্রোপচার করানোর আর্থিক সামর্থ্য নেই। ফলে কীভাবে ঢাকায় নিয়ে যাবো এই নিয়ে আমরা দু:চিন্তায় আছি।

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন