জীবননগর আদর্শ সরকারী মহিলা কলেজে বসন্তবরণ উৎসবে শিক্ষার্থীদের সাথে অধ্যক্ষের নাচের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার একটি আদর্শ বিদ্যাপিট জীবননগর সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজ। আর এই কলেজের বসন্তবরণ উৎসবে শিক্ষার্থীদের সাথে অধ্যক্ষের নাচের একটি ভিডিও ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছে। জীবননগর শহরে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা সহ টক অব দা টাউনে পরিনত হয়।বিপরীতে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরী হয় অভিভাবক মহলে। যে তাদের সন্তানদের নাচের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। দেশের মানুষের মাঝে বিষয়টিকে নেতিবাচকভাবে প্রকাশ হওয়ার কারনে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন । জনমনে ও বাস্তবে তার কি প্রভাব পড়ে তা না ভেবেই যেকোন বিষয়কে নিয়ে টানাটানি করা কখনোই উচিত নয় বলে জানান স্থানীয় কিছু অভিভাবকগণ।
 নাচের ভিডিওতে দেখা গেছে   কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ-আলাউদ্দীন  শিক্ষার্থীদের অনুরোধ রাখতে গিয়ে  বসন্তবরনের এই উৎসবের মঞ্চে  শিক্ষার্থীদের সাথে নাচতে বাধ্য হন । ভিডিওতে লক্ষ্য করা গেছে প্রিয় শিক্ষকের সাথে নেচে-গেয়ে শিক্ষার্থীরা ছিল আনান্দে  আত্মহারা। উপস্থিত শিক্ষক শিক্ষার্থী  সবাই হাতে তালি দিয়ে অধ্যক্ষকে আরো উৎসাহ প্রদান করেন। ভালো ভাবেই শেষ হয় বসন্তবরণ উৎসব। আর এ উৎসবের ঠিক চারদিন পর মঙ্গলবার দুপুরে
ঐ নাচের ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।  কলেজের শিক্ষার্থী জেসমিন, স্বপ্না, হাসি,  মিম, মিতা, রুরাইয়া, ঐশী জানায় ঐদিন তারা বসন্ত বরণ উৎসব উপলক্ষে শাড়ি পড়ে মঞ্চে উঠে নিত্যানুষ্ঠান করে এবং তাদের প্রিয় শিক্ষককে ও চেয়ার থেকে টেনে তুলে মঞ্চে নিয়ে যায়। এবং স্যার কে নিয়ে একটু আনন্দ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের পিতৃতুল্য স্যারকে নিয়ে আমাদের নাচের ভিডিও টিকে এভাবে ভাইরাল যারা করেছে এটা খুবই খারাপ কাজ করেছে। কারণ আমরা কলেজের ভিতরে বসন্ত বরণ উৎসব উপলক্ষে আনন্দ করতেই পারি।
 
 
এটা এভাবে ভাইরাল করা কখনই ঠিক হয়নি। আমাদের প্রতিষ্ঠান ও পিতৃতুল্য শিক্ষককে নিয়ে যারা বাজে ভাবে মন্তব্য করেছেন তাদের কাছে জানতে চাই আপনারা কেউ ঐদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।  যদি নাই থাকেন তাহলে না জেনে শুনে কেন নেতিবাচক’ কমেন্ট করবেন। আমরা আপনাদের বোনের মত আমাদের সম্মান এবং আমাদের প্রতিষ্ঠান প্রধানের সম্মান নিয়ে এভাবে কটুক্তি করে মন্তব্য করা আপনাদের কখনো ঠিক হয়নি।
 আপনার একটু নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করেন তাহলে সব উত্তর খুঁজে পাবেন।
এ বিষয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে সরেজমিনে গেলে তাদের মধ্য থেকে মোঃশরিফুল ইসলাম, মোঃ হাফিজুর রহমান, মোছাঃ- শিরিনা আক্তার জানান বর্তমানে ভার্চুয়াল জগতে একশ্রেনীর মানুষ অন্যের সমালোচনা করে নিজের প্রভাব প্রতিপত্তি গড়তে  ফেসবুক ও মিডিয়াকে নেতিবাচক হিসেবে ব্যবহার করছে। অনেক সময় নেটিজেনরা সাধারন বিষয়গুলো নিয়ে নেতিবাচকভাবে  সমাজের মানুষের সামনে তুলে ধরে। এবং বিরুপ প্রতিক্রিয়া  তৈরী করে।
এ বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই দুঃখিত আমাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করতে একপ্রকার স্বার্থন্বেষী মহল উঠে পড়ে লেগেছে। যে কারণে তারা আমাদের একটি নাচের ভিডিও এডিট করে ফেসবুকে ভাইরাল করে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে এটা কখনোই ঠিক হয়নি। আমরাতো আপনাদের  আপনজন তাহলে কেন আমাদের এইভাবে সম্মানহানি করলেন। আমরা এর জন্য প্রশাসনের নিকট  বিচার চাই এবং যে এই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল করেছে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে আইনানুগ যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে চুয়াডাঙ্গার একজন সচেতন নাগরিক জনি আহম্মেদ  তার নিজস্ব ফেসবুক প্রোফাইলে কিছু ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। অপরদিকে জীবননগর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর আতিয়ার রহমান তার ব্যক্তিগত প্রোফাইলে গঠনমুলক অনুসন্ধানমুলক মন্তব্য করেন। অনেকে আবার এই বিষয়টাকে সাধারণ বিষয় সাধারন বিষয় হিসেবে দেখেছে
কারণ এখানে শিক্ষকের কোন দোষ খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।
 
 
এ বিষয়ে জীবননগর আদর্শ সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আলাউদ্দীন মিয়া জানান  বসন্তবরন উৎসবের ওইদিন জীবননগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব সিরাজুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এলাকার আমন্ত্রিত  গণ্যমান্য বিশেষ অতিথিবৃন্দসহ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে নাচের সময় শিক্ষার্থীরা  আমাকে জোরকরে অনুরোধ করে । প্রথমে আমি যেতে না চাইলেও পরবর্তীতে  সকলের অনুরোধে আমি মঞ্চে উঠতে বাধ্য হই। এক পর্যায়ে তাদেরকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য একটু একটুও হাত-পা নাচাই এইটুকু ভিডিও করে পাঁচ দিন পরে কিছু কুচক্রী মহল সাংবাদিকদের কাছে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরে।এবং আমাকে ও আমার প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। আমি এই বিষয়টি নিয়ে প্রথমে খুবই কষ্ট পেয়েছি এবং সকলের সামনে ঘটে যাওয়া বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে এই ভিডিওটি নিয়ে না জেনে অনেকেই খারাপ মন্তব্য করেছেন তার জন্য আমি খুবই হতাশ হয়েছি।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জনাব নজরুল ইসলাম সরকার জানান ওই শিক্ষক আনন্দের বশবর্তী হয়ে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ রাখতে গিয়ে মঞ্চে উঠে নাচতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু পাঞ্জাবি ও টুপি পড়ে নাচের বিষয়টি একটু নেতিবাচক হিসেবে লক্ষণীয় ছিল তবে বিষয়টি ভাইরাল হয়েছে এটা খুবই দুঃখজনক।
মামুন মোল্লা
চুয়াডাঙ্গা
https://www.youtube.com/watch?v=cBDrZl7pPps

আপনি আরও পড়তে পারেন