সাংবাদিক আরিফুল হাইকোর্টে

মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা দেয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরিফুল হক হাইকোর্টে এসেছেন।

 

সাজার বৈধতা চ্যালেঞ্জ এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে বিচারপতি আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মোহাম্মদ রাশেদ জাহাঙ্গীরের বেঞ্চে করা এক রিট আবেদনের শুনানির দিন ধার্য থাকায় সোমবার (২৩ মার্চ) তিনি উচ্চ আদালতে এসেছেন।

এর আগে ১৫ মার্চ বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১৭ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়।

রিটে ফৌজদারি কার্যবিধি, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং সংবিধানের ৩১,৩২, ৩৩, ৩৫ এবং ৩৬ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান।

টাস্কফোর্সের নামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেয়া সাজা এবং জেল প্রদান কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।

রিটে টাস্কফোর্সের নামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেয়া সাজা সংবিধানের ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৫ এবং ৩৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভুত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও সাংবাদিকদের সুরক্ষায় নীতিমালা তৈরিতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না, রিটে সে নির্দেশনা চাওয়া হয়। এছাড়া সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিটে কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীন, কুড়িগ্রামের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার নিজাম উদ্দিন এবং কুড়িগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমাকে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে সাজা প্রদানের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হাইকোর্টে তলব, আরিফুল ইসলামকে সাজা দেয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত মামলার নথি ও টাস্কফোর্স পরিচালনার নথি তলব করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

গত ১৫ মার্চ সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দণ্ডে কারাগারে যাওয়া আরিফুল ইসলামকে জামিন দেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আরিফুল ইসলামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন জানান, ২৫ হাজার টাকা জামানত রেখে আরিফকে জামিন দেয়া হয়।

গত ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে। তার বাসায়  আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ আনা হয়। এরপর গভীর রাতে জেলা প্রশাসকের অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফুল এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি। এছাড়া সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন