সময়টা ফারিণের

রোজা ও কোরবানির ঈদের ৩১টি নাটকে অভিনয় করেছেন তাসনিয়া ফারিণ। গত ঈদে অপি করিম, ঈশিতার পর তাঁর নামই বেশি আলোচিত হয়েছে।

শুরুটা মডেলিং দিয়ে। অভিনয়ে এলেন ২০১৮ সালে। অভিনয়ে নিয়মিত হয়েছেন গত বছর থেকে। পড়াশোনার একটা ধাপ [অনার্স] সম্পন্ন করেছেন এরই মধ্যে। ভেবেছিলেন ২০২০ সালটা অন্য রকম কাটবে, অনেক বেশি সময় দিতে পারবেন শোবিজে। কিন্তু পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দিল করোনা। তবু দুই ঈদে ফারিণ অভিনীত ৩১টি নাটক প্রচারিত হয়েছে! রোজার ঈদে ১৬টি, কোরবানির ঈদে ১৫টি! ঈদুল ফিতরে সব অভিনয়শিল্পীর নাটকই কম ছিল। কিভাবে এত নাটক প্রচারিত হলো ফারিণের? ‘রোজার ঈদের তিন-চারটা নাটকে অভিনয় করেছিলাম। তার আগে পহেলা বৈশাখের জন্য করেছিলাম বেশ কিছু নাটক। আগেরও কিছু জমা ছিল। সব নাটকই প্রচারিত হলো ঈদে’, বললেন ফারিণ।

টানা ঘরবন্দি থাকার পর জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে শুরু করলেন কোরবানির ঈদের নাটকের শুটিং। নতুন করেছেন ১০টি নাটক, আগের শুটিং করা ছিল পাঁচটি। ১৫টির মধ্যে বেশি প্রশংসা পেয়েছেন পাঁচটি নাটকে—মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘জানবে না কোনোদিন’ ও ‘শহর ছেড়ে পরাণপুর’, সঞ্জয় সমাদ্দারের ‘যে শহরে টাকা ওড়ে’, তানভীর আহমেদের ‘আমার একটাই বউ’ এবং কাজল আরেফিন অমির ‘মাস্ক’। এগুলো ছাড়াও ইউটিউবে বেশি ‘ভিউ’ পাওয়া নাটক আছে তিনটি—মাহমুদুর রহমান হিমির ‘বিগ প্রবলেম’, রুবেল হাসানের ‘ডোন্ট টাচ মি’, শহীদুন্নবীর ‘ফিফটিন শেডস অব লাভ’।

টেলিভিশনের ঈদ অনুষ্ঠানমালা শেষ হওয়ার পর শুরু হয় পরিচালক, অভিনয়শিল্পীদের পারফরম্যান্সের চুলচেরা বিশ্লেষণ। পত্র-পত্রিকায় যেমন হয়, হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। গেল কয়েক বছরে ঘুরেফিরে যে নামগুলো এসেছে, এবার প্রথম সেখানে উঠে এসেছে ফারিণের নাম। নিশ্চয়ই বড় প্রাপ্তি? ‘অবশ্যই। অভিনয়ে এসে বুঝেছি এই জায়গাটা কত কঠিন। অভিনয়ে আসার চিন্তা কখনো ছিল না আমার। একটা ভালো সিনেমা দেখলে প্রায় সবারই মনে হয়, ইস আমি যদি অমুক চরিত্রটা করতে পারতাম! সেই সুপ্ত বাসনা আমার পূরণ হয়েছে। আমি কোনো রেসে নেই। মোশাররফ করিম, অপূর্ব, আফরান নিশো, ইন্তেখাব দিনার ভাইদের মতো অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয়ের সুযোগ আমিও পেয়েছি, এটাও আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি’, বলেন ফারিণ।

যাঁদের নাম নিলেন ফারিণ, তাঁরা প্রত্যেকেই জনপ্রিয় শিল্পী। তাঁদের মূল্যায়ন কিভাবে করবেন দুই বছর ক্যারিয়ারের এই অভিনেত্রী? ফারিণ বলেন, “ভালো সহশিল্পী অবশ্যই ম্যাটার করে। ‘যে শহরে টাকা ওড়ে’তে মোশাররফ ভাই যে অভিনয়টা করেছেন, আমি তো কাছ থেকে দেখেছি, বলতে পারেন আমার একটা কর্মশালা হয়ে গেছে। নিশো ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করলে তিনি বলে দেন, ফারিণ এভাবে করলে কিন্তু ভালো হতে পারে। অপূর্ব ভাই ধীরেসুস্থে প্রতিটা শট দেন। তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে কাজ করা মানে আমি নতুন কিছু শিখছি।’

ঈদের পর ফের নিজেকে ঘরবন্দি করেছেন। সহসা কাজে ফিরছেন না বলেও জানালেন। ফারিণের ঘরবন্দি সময়টা কাটে কিভাবে? ‘আগে একদমই রান্না পারতাম না। এখন প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু রান্না করছি। দুই ঈদে ৮-১০ পদ রান্না করেছি। বলতে পারেন রান্নায় বেশ পারদর্শী হয়ে উঠেছি। এ ছাড়া লেখালেখি, শরীরচর্চা, বই পড়া, সিনেমা দেখা এগুলো তো আছেই’, বলেন ফারিণ। কী লিখছেন?

ফারিণ বলেন, ‘গল্প, উপন্যাস, কবিতা। তবে এগুলোর কোনোটিই এখন পর্যন্ত কোথাও প্রকাশিত হয়নি। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির খুব শখ, টুকটাক চেষ্টা করি। তবে আমি কিন্তু গাইতে পারি।’

ফেসবুকে নেই ফারিণ, আছেন ইনস্টাগ্রামে। সেখানে ফারিণের গাওয়া কিছু কভার সং পাওয়া যায়। ‘লকডাউনে যে উপকার হয়েছে তা হলো গানের চর্চাটা আবার করতে পেরেছি। নাটকের চেয়েও অনেক বেশি এক্সাইটেড থাকি গান প্রকাশ করার সময়। কে কী মন্তব্য করছেন, বারবার চেক করি। নিজেকে তখন গায়িকা গায়িকা লাগে, হা হা হা।

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন