ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও নির্বাচনে ‘চূড়ান্ত রায়’ নাও দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কারচুপি এবারের নির্বাচনে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু অভিযোগই নয়, আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন তিনি।

 

বুধবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে তিনটি রাজ্যে ভোট গণনা বন্ধ করার দাবি নিয়ে আদালতে গিয়েছেন ট্রাম্প। প্রশ্ন হচ্ছে মার্কিন নির্বাচনে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে কি না? আদালত আদৌ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে কিনা, তা শুধু মার্কিন মুল্লুকে নয়, গোটা বিশ্বেই এই প্রশ্ন ঘুরছে।

তবে ট্রাম্পের এ ধরনের হুমকিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত কোন বক্তব্য নাও দিতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিশেষজ্ঞরা।

তারা জানান, নির্বাচনের দিন বা তার আগে প্রাপ্ত ব্যালটের গণনা বন্ধ করার জন্য ট্রাম্প আদালতে আসার যে ঘোষণা দিয়েছেন, আমাদের মনে হয় না আদালত তাতে সমর্থন দিবে। পেনসিলভেনিয়া এবং মিশিগান রাজ্যের ভোটের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে এমন কোনও বিরোধও আদালত পরিচালনা করতে পারে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

বুধবার (৪ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোট গণনা চলাকালীন বেশ কয়েকটি রাজ্যে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনেছেন ট্রাম্প।

এ সময় তিনি কোন রকম প্রমাণ উপস্থাপন না করেই দাবি করে বলেন, ‘নির্বাচনে কারচুপি করা হয়েছে। এটা আমেরিকান জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে যাবো। এখন আমরা সব ভোট গণনা কার্যক্রম বন্ধ চাই। এটা খুবই দুঃখজনক একটি মুহূর্ত।’

তবে ট্রাম্প তার জালিয়াতির অভিযোগের পক্ষে বা সুপ্রিম কোর্টে তিনি কী মামলা মোকদ্দমা করবেন তার কোন প্রমাণ সরবরাহ করতে পারেননি। এছাড়া তিনি পেনসিলভেনিয়ায় দেরিতে আসা মেইল-ইন ব্যালট গণনার জন্যও সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যে একটি মামলা করেছে। এবং তার বিচারের জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ট্রাম্প শিবির।

এছাড়া মিশিগানসহ কয়েকটি রাজ্যে ভোট গণনা বন্ধ করতে ট্রাম্প প্রচার শিবির আবেদন করেছে।

এবারের নির্বাচনে কে বিজয়ী হতে যাচ্ছেন- তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন মন্তব্য করা যাচ্ছে না। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে প্রচুর সংখ্যক মেল-ইন ভোট প্রদান করেছেন আমেরিকানরা। এগুলোর গণনা শেষ করে আরো কয়েক ঘণ্টা বা দিন লাগতে পারে ফলাফল জানাতে।

তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ব্যালট বা ভোটদান ও গণনা পদ্ধতির বিষয়ে আপত্তি থাকতে পারে, তবে এ জাতীয় বিরোধ চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ করবে তা স্পষ্ট নয়।

ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির নির্বাচন আইন বিশেষজ্ঞ নেড ফোলি বলেন, ২০০০ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং আল গোরের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিলেন। যা জর্জ ডব্লিউ বুশের অধীনে যায়। এবারের পরিস্থিতি এমন না।

তিনি বলেন, এটি আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে না যে-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে যে নির্বাচনের ফলাফল কী হবে।

বুধবার ট্রাম্পের অ্যাটর্নি জেনা এলিস বলেন, যদি আমাদের আইনি চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করতে হয় তবে তা নজিরবিহীন নয়। এলিস ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে একটি সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, তিনি নিশ্চিত করতে চান ভোট যেন চুরি না হয়।

২০০০ সালে আল গোর প্রতিনিধিত্বকারী ডেভিড বোইস বলেন, ট্রাম্পের অভিযোগ সফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এছাড়া মিশিগান এবং উইসকনসিনের ফলাফলের উপর নির্ভর করে যদি জো বাইডেন বিজয়ী হয়। তাহলে পেনসিলভেনিয়া ফলাফল অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে।

আইন বিশেষজ্ঞরা জানান, বাইডেন যদি পেনসিলভেনিয়া ছাড়াই ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পান তবে এ রাজ্যে আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনা হ্রাস পাবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন