অন্য দেশের ভাস্কর্যের ছবি টেলিভিশনে প্রচারের আহ্বান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর

অন্য দেশের ভাস্কর্যের ছবি টেলিভিশনে প্রচারের আহ্বান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর

পাকিস্তানসহ অন্য মুসলমান অধ্যুষিত দেশে যেসব ভাস্কর্য আছে সেগুলো টেলিভিশনে প্রচার করার আহ্বান জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বুধবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত নাট্যজন আলী জাকের ও ফুটবলার বাদল রায় স্মরণে শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।

মোজাম্মেল হক বলেন, আমি সরকারকে অনুরোধ করতে চাই, বিশেষ করে আমাদের তথ্য মন্ত্রণালয়কে, পৃথিবীর সমস্ত মুসলিম অধ্যুষিত দেশে এবং তাদের সাধের পাকিস্তানসহ সব দেশের ভাস্কর্য টেলিভিশনের মাধ্যমে সারা জাতিকে দেখানো হোক। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হোক, দূতাবাসের মাধ্যমে সব ভাস্কর্য সংগ্রহ করে প্রচার করা হোক। তাহলে মানুষ আসল ঘটনা বুঝবে। এরপর তারা বলুক কোন উদ্দেশ্য তারা বাস্তবায়ন করতে চায়, তাদের এজেন্ডা কি।

তিনি বলেন, একাত্তরের আগেও বলা হয়েছে পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে এদেশে ইসলাম থাকবে না। ইসলামের কবর রচনা হয়ে যাবে। আমার মনে হয় সেই গোষ্ঠীর কিছু সংখ্যক আলেম নামধারী ইসলামকে কলঙ্কিত করার জন্য, ইসরায়েলের সঙ্গে যাদের বন্ধুত্ব, তাদের টাকায় অতি ধর্মপরায়ণ ভাব দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ইসলামের অপব্যাখ্যা করে আমাদের পবিত্র ধর্মকে বিতর্কিত করে তুলছে।

মন্ত্রী বলেন, মূর্তি ও ভাস্কর্য এক জিনিস নয়। পৃথিবীর সব মুসলিম দেশে ভাস্কর্য রয়েছে। এমনকি তিনটি ইসলামিক রাষ্ট্র- ইরান, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে প্রচুর ভাস্কর্য রয়েছে। ইরানে খামেনির বিশাল ভাস্কর্য আছে। করাচিতে বেনজির ভুট্টোর বিশাল ভাস্কর্য আছে, আফগানিস্তানেও আছে। অন্য মুসলিম অধ্যুষিত দেশেও আছে। ১৯৭২ সালে গাজীপুরে ভাস্কর্য বানিয়েছিলাম আমরা। গ্রেনেড, অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কই এতদিন তো কেউ কিছু বলে নাই। হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর নাম ধরে বলে-তার ভাস্কর্য স্থাপন করলে এই করবে সেই করবে! এদের ধৃষ্টতা কত বড়।

মন্ত্রী বলেন, ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিষদাঁত ভেঙ্গে ফেলতে হবে। কয়েকজন ব্যক্তির কাছে ইসলাম ধর্মকে লিজ দেয়া হয়নি।

ভাস্কর্য ইস্যুতে হক্কানি আলেমদের ঈমানি দায়িত্ব পালন করার করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা নীরব থাকবেন না। হক্কানি আলেমরা নায়েবে রাসুল হিসেবে এগিয়ে আসুন, সঠিক কথা বলুন। ভাস্কর্য ইসলামে হারাম নয়, সেটা জাতিকে বলুন। যারা আলেম সমাজ, তারা যদি কথা না বলে, মানুষ ধরে নেবে ইসলাম জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয়। সুতরাং হক্কানি আলেমদের এগিয়ে আসতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিষয়ে যারা ঔদ্ধত্বপূর্ণ ও আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছে এবং নানা রকম হুমকি দিচ্ছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইসলামের শত্রু বলে মন্তব্য করে তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা চিত্ররঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি লায়ন মো. গনি মিয়া বাবুল, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল বাহার টিপু, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা ও বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী এস ডি রুবেল প্রমুখ।

আপনি আরও পড়তে পারেন