রাজধানীতে উদ্ধার হওয়া ইউরেনিয়াম কী কাজে লাগে?

রাজধানীতে উদ্ধার হওয়া ইউরেনিয়াম কী কাজে লাগে?

রাজধানীর রামপুরা এলাকায় বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৫৫ কোটি টাকার ইউরেনিয়াম জব্দ করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা র‍্যাবকে জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন উৎস থেকে অবৈধভাবে ইউরেনিয়াম ক্রয় করে। দীর্ঘদিন ধরেই তারা ইউরেনিয়াম ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছিলেন।

এর আগেও ২০১৪ সালের আগস্টে ঢাকায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ ইউরেনিয়াম বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে দুই পাউন্ড ওজনের ইউরেনিয়ামও জব্দ করা হয়।

বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে দামি পদার্থ হিসেবে ধরা হয় ইউরেনিয়ামকে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান জ্বালানি হচ্ছে ইউরেনিয়াম। দেখা গেছে যে, ৪ হাজার ৫০০ টন উচ্চ গ্রেডের কয়লা থেকে যে পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায় সেই একই পরিমাণ শক্তি মাত্র এক কেজি ইউরেনিয়াম থেকে পাওয়া যায়।

ইউরেনিয়াম একটি তেজস্ক্রিয় ধাতু ও উচ্চ ঘনত্বের মৌল, যা ১৭৮৯ সালে বিজ্ঞানী মার্টিন হাইনরিখ ক্লাপরথ ইউরেনিয়াম আবিষ্কার করেছিলেন। ধারণা করা হয় যে, তখনকার সবচেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনা ছিল ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কার এবং তিনি তখন এই ইউরেনাস গ্রহের নামানুসারেই তার আবিষ্কৃত মৌলের নাম রেখেছিলেন ইউরেনিয়াম। ১৮৯৬ সালে বিজ্ঞানী হেনরি বেকেরেল সর্বপ্রথম ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন।

কাজাখিস্তান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিজার, নামিবিয়া এবং রাশিয়ায় ইউরেনিয়াম বাণিজ্যিক ভিত্তিকে উত্তোলিত হয়।

অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের সাবেক সদস্য ড. মোহাম্মদ আহসান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘সাধারণত নির্দিষ্ট মানের ইউরেনিয়াম অস্ত্র তৈরিতে কাজে লাগে। তবে সে জন্য অনেক অবকাঠামোর দরকার হয়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই কালোবাজারে ইউরেনিয়াম কেনাবেচার চেষ্টা করা হয়।’

তবে ইউরেনিয়ামের বিভিন্ন মান রয়েছে। সেই মান অনুযায়ী ইউরেনিয়াম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র অথবা পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া কিছু শিল্পেও ব্যবহৃত হয়।

তিনি জানান, র‍্যাব যে উদ্ধারের কথা বলছে, সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া কী ইউরেনিয়াম, কোন মানের, কার্যকরী কিছু কিনা, সেটা বলা সম্ভব নয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন