রংপুরের গঙ্গাচড়ায় জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে সার্চ লাইব্রেরি

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে সার্চ লাইব্রেরি

মারুফা জামান, গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি :

রংপুর শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার ও গঙ্গাচড়া সদর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আলমবিদিতর ইউনিয়নের সিট কুতুব গ্রাম। এটি প্রত্যন্ত গ্রাম হওয়ায় শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তকের বাহিরে অন্যান্য জ্ঞানমূলক বই থেকে জ্ঞান আহরণের সুযোগ নেই। শুধু তাই নয়, গ্রামের মানুষেরা যে পত্রপত্রিকার মাধ্যমে খবরাখবর জানবে এরও তেমন সুযোগ নেই।

তাই তারা জানার মতো অনেক কিছু থেকে পিছিয়ে। আর গ্রামের পিছিয়ে পড়া এসব মানুষের কথা ভেবে ওই গ্রামেরই সন্তান চক্ষু চিকিৎসক আশরাফুল ইসলাম এগিয়ে আসেন। তিনি কয়েকজন শিক্ষিত ছেলেকে সাথে নিয়ে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সার্চ লাইব্রেরি। প্রথমে সামান্য কিছু বই ও পত্রিকা দিয়ে শুরু করলেও এখন অনেক বই ও পত্রপত্রিকা রয়েছে।

বইয়ের মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মনীষীদের আত্মজীবনী, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক, সাহিত্যিক, ধর্মীয়, গল্প, নাটক, উপন্যাস, সাধারণ জ্ঞানসহ নানান ধরণের সৃজনশীল বই। লাইব্রেরিতে নিয়মিত নেওয়া হয় স্থানীয় ও জাতীয় কয়েকটি সংবাদ পত্রিকা। ফলে সব বয়সের মানুষ প্রতিদিন লাইব্রেরিতে এসে পছন্দের বই ও পত্রিকা পড়ে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করছেন।

এছাড়াও লাইব্রেরি পরিচালনা কমিটি নিজস্ব ব্যানারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালনসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ও দরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে থাকে। সরেজমিন দেখতে গেলে গ্রামের বয়স্ক ব্যক্তি এলাহী বকস ও আব্দুল আজিজ জানান, মসজিদের পাশেই লাইব্রেরি হওয়াতে সুবিধা হয়েছে। আমরা বয়স্করা সাংসারিক কাজ-কর্ম শেষে আছরের নামাজের পর লাইব্রেরিতে পছন্দমত বই পড়ি। যা জানা ছিলনা তা জানতে পারছি।

শিক্ষার্থী রিপন, শহিদুল, জাদু, সিদ্দিকুর বলেন লাইব্রেরি হওয়াতে বিদ্যালয়ের পাঠ্য পুস্তকের বাইরে অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে। পরিচালনা কমিটির সম্পাদক মোশারফ করিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রবিউল ইসলাম জানান, লাইব্রেরিটি সংশ্লিষ্ট সদস্যদের মাসিক চাঁদা ও প্রতিষ্ঠাতার আর্থিক সহযোগিতায় সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে এখনও অনেক সমস্যা আছে। কোনো সহৃদয় ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান অথবা জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে সহযোগিতা পেলে সমস্যা কিছুটা নিরসন হত। লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা চক্ষু চিকিৎসক আশরাফুল ইসলাম বলেন, তিনি শহরে থেকে শিক্ষা নিয়েছেন।

শহরের শিক্ষার্থী ও মানুষজন জ্ঞান অর্জনের অনেক সুযোগ পায়। কিন্তু গ্রামের মানুষজন ও শিক্ষার্থীরা সে তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে। এ কারণে নিজ গ্রামে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন। লাইব্রেরিটি সরকারিভাবে অনুমোদনসহ নতুন নতুন তথ্য সমৃদ্ধ বই সরবরাহের চেষ্টা অব্যাহত রখেছেন। তিনি লাইব্রেরির সার্বিক উন্নয়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজের শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতা একান্তভাবে কামনা করেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন