সাভারে ঘর নলকূপ প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করলেন চক্রের সদস্যরাই

সাভারে ঘর নলকূপ প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করলেন চক্রের সদস্যরাই

উজ্জ্বল হোসাইনঃ নিজস্ব প্রতিবেদক 
বঙ্গবন্ধু পক্ষাঘাত ও পেশাজীবী পরিষদ নামে নিজ উদ্যোগে সংস্থা খুলে সরকারি ঘর ও গভীর নলকূপ দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার দায়ে আল-আমীন (৪০) নামের মুল হোতাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এঘটনায় তার বিরুদ্ধে প্রতারক চক্রের এক সদস্যই করেছেন মামলা। 
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) দুপুরে অন্যান্য আসামিদের সাথে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে তাকে প্রিজন ভ্যানে উঠাতে দেখা যায়। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। 
গ্রেপ্তার আল আমীন ঢাকার ধামরাই উপজেলার ধামরাই দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত শাহ আলমের ছেলে। তিনি সাভারের মালঞ্চ এলাকায় ভাড়া থেকে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ের নিচে একটি পোশাক কারখানার ব্যবসা করতেন। পাশাপাশি প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আল-আমীন ও তার অজ্ঞাত  ৩ থেকে ৪ জন অজ্ঞাতনামা সহযোগী বিড ফেয়ার বাংলাদেশ গার্মেন্টসের পরিচালক এবং তার অ্যাকশন ভিলেজ ফর স্পেশাল নিডস নামের একটি সংস্থার পরিচয় দেয়। আল-আমীন বাদীদের জানায়, এনজিওর মাধ্যমে এলাকার গরিব জনগণকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ১ তলা বাড়ি অনুদান দেবেন। আর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হওয়ায় সেলিনাকে এ কাজে সম্পৃক্ত করেন। পরে জামানত হিসাবে সেলিনা স্থানীয় ৩৪ টি ঘরের জামান হিসাবে ২৮ টি পরিবারের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৪০ হাজার,  ঝুমা খান ৬০ টি ঘরের জামানত বাবদ ৬৮ লাখ টাকা ও লিমা শেখ ৩ লাখ ৪ টি ঘরের বিপরীতে, সালমা আক্তার ৬০ টি ঘরের বিপরীতে ৯২ লাখ টাকাসহ মোট ১৫৪ টি ঘরবাবদ ১ কোটি ৭৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা নেয়। পরে ৬ টি ঘরের কাজ সম্পন্ন করা হয়, যোখানে সেলিনা বেগমের ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয় বলে দাবি করেন। বাকি ঘরের কাজ সম্পন্ন করতে তাগিদ দিলে তালবাহানা করে আল-আমিন। গত ১৫ মার্চ সাভার পাকিজার মোড় এলাকায় আল-আমীনের সাথে দেখা হলে তিনি ঘর ও টাকা ফেরত না দেওয়ার কথা জানায় এবং হুমকি প্রদান করেন। এসময় আল-আমীনকে আটক করে সাভার থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। আরও অনেক সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে এই আল-আমিন অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
তবে এলাকার অসহায় গরীব ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একটি ঘর বাদ সেলিনা ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। যা মামলার এজাহারে একটি ঘর বাবদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়। 
এদিকে আল-আমীন আটকের ঘটনা জানাজানি হলে প্রতারক চক্রের অপর সদস্য রাহিমাকে সাভারের বেঁদে পাড়ায় আটক করে ভুক্তভোগীরা। এছাড়া বকেয়া বেতনের দাবিতে আল-আমীনের মালিকানাধীন বিড ফেয়ার গার্মেন্টসের শ্রমিকরা থানার সামনে জমায়েত হন।
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, আল-আমীনের বিরুদ্ধে সেলিনা, ঝুমা ও লিমা নামের তিন নারী বাদি হয়ে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন