টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মো. মহীউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নারী বাবুর্চি শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন। এছাড়া ওই বাবুর্চির ভাগনিকেও কুপ্রস্তাবসহ হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে টিএইচওর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই নারী বাবুর্চি।
অভিযোগে জানা গেছে, ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মো. মহীউদ্দিন ওই নারী বাবুর্চিসহ তার ভাগনিকে তার (টিএইচও) কোয়ার্টারে যেতে বলেন। পরে ওই বাবুর্চি ও তার ভাগনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কোয়ার্টারে গেলে তিনি তাদের দুইজনকেই কুপ্রস্তাব দেন। পরে তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাবুর্চিকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন ডা. মহীউদ্দিন। কিন্তু পরবর্তীতে শ্লীলতাহানি করতে না পেরে মারধর করেন বাবুর্চিকে। পরে ওই বাবুর্চি চিৎকার করে টিএইচওর রুমে ফাঁসি দিতে গেলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।
এর আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচিতে (এসএসকে) অস্থায়ী ভিত্তিতে উস্বাক/ ভূঞা/এসএসকে/ট্রেন্ডার/ জনবল ন্যাস্তকরণ/২০২১/১১৭২ স্মারকে দুই দফায় দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে বাবুর্চির ভাগনিকে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে নিয়োগপত্র দেন টিএইচও। পরে তাকেও চাকরির ভয় দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন তিনি।
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওই নারী বাবুর্চি বলেন, হাসপাতালের টিএইচও আমাকে ও আমার ভাগনিকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনার দিন তার (টিএইচও) কোয়ার্টারের রুমে ফাঁস দিতে গেলে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। এছাড়া ভাগনিকে হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাকরির জন্য দুই দফায় দেড় লাখ টাকা নেন ডা. মহীউদ্দিন। পরে ভাগনিকে ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। ওই পদে অন্যজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরে ঘটনার বিচার চেয়ে গত ৮ আগস্ট জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মো. মহীউদ্দিন আহমেদে বলেন, কে বা কার প্ররোচনায় বাবুর্চি এটা করেছেন তা জানি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, যেহেতু ঘটনাটি স্পর্শকাতর। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন আবুল ফজল মোহাম্মদ সাহবুদ্দিন খান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাবুর্চির (কুক) লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিভিল সার্জনকে বলা হয়েছে।