‘খামারের গরু-মুরগিতে মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক’

‘খামারের গরু-মুরগিতে মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক’

দেশে গরু, মুরগি, মাছসহ বিভিন্ন খামারে মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার হয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। কিন্তু আমরা দেখি খামারগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে কোনো নিয়ম মানা হয় না। এসব খাবারের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। তাই এটি থেকে সাবধান হতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে বিশ্ব অ্যান্টিবায়ােটিক সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হারিয়ে গেলে আমরা বিপদে পড়ে যাব। যেনতেনভাবে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করলে মৃত্যু বাড়বে। এতে রোগী বাড়ার সঙ্গে হাসপাতালেও চাপ বেড়ে যাবে।

জাহিদ মালেক বলেন, আমরা চাই নতুন নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আসুক। যেগুলো আছে সেগুলোর কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না।

প্রেসক্রিপশন (ব্যবস্থাপত্র) ছাড়া কাউকে অ্যান্টিবায়োটিক না দিতে ফার্মাসিস্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি ও বিতরণ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ওষুধ নীতি তৈরি হয়েছে, ইতোমধ্যে কেবিনেট অনুমোদন দিয়েছে। জাতীয় সংসদে অনুমোদন হলে আইন অনুযায়ী সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হবে।

 

মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণের জন্য কোভিড ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা হয়েছে। সম্প্রতি কোভিড চিকিৎসার ওষুধ বাজারে সহজলভ্য করা হয়েছে। মনলুপিরাভির আমেরিকা অনুমােদন দেওয়ার পরপরই বাংলাদেশ অনুমােদন দিয়েছে। কিন্তু আমাদের জন্য কোভিড-১৯ এর চেয়েও বড় যে দুর্যোগ অপেক্ষা করছে তা হলাে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেসিস্ট্যান্স।

তিনি বলেন, অ্যান্টিবায়ােটিকের অপব্যবহার বন্ধ করা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেসিস্ট্যান্স প্রতিরােধের একমাত্র সমাধান। নিবন্ধিত ফিজিশিয়ান, ডেন্টিস্ট ও প্রাণী চিকিৎসক ছাড়া অ্যান্টিবায়ােটিক ক্রয়-বিক্রয় একেবারেই বন্ধ করতে হবে।

জাহিদ মালেক বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়ােটিক ক্রয়/বিক্রয় বন্ধে আমরা আইন প্রণয়ন করব, আইনটি চূড়ান্ত অনুমােদনের অপেক্ষায় আছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মােতাবেক এএমআর সংক্রান্ত নজরদারি এবং পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা আরও বাড়াতে হবে। সিভিল সােসাইটি, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, প্রশাসন, মানব ও প্রাণী স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট সকল পেশাজীবীদের সমন্বয়ে জনসচেতনতা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন