বাড়ছে শীত, জমেছে শীতবস্ত্র কেনাবেচা

বাড়ছে শীত, জমেছে শীতবস্ত্র কেনাবেচা

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি;

গত কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় সারা বাংলাদেশের মতো নেত্রকোনায় দিন দিন বেড়েই চলেছে শীতের প্রকোপ।শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছে গরম কাপড়ের বেচাকেনা।

প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় হিমেল হাওয়া আর তার সঙ্গে যোগ দেয় ঘন কুয়াশা। এ কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জেঁকে বসেছে শীত। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ।শীত থেকে বাঁচতে ছুটছে শহরের ফুটপাতসহ গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে।

বিভিন্ন উপজেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় বিপণি বিতান, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন অলি-গলিতে গরম পোশাকের বিক্রির ধুম পড়েছে। বিশেষ করে জ্যাকেট, সোয়েটার, ক্যাপ, মোজাসহ শীতের হরেক রকমের পোশাকের বেচাকেনায় ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা।

শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে কম দামে গরম পোশাক কিনতে ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। এসব দোকান থেকে সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১,০০০ হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শীতের পোশাক কিনতে পারছেন বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ।

অন্যদিকে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ভ্যানে পুরোনো গরম কাপড় বিক্রির ধুম পড়েছে। এখানে ক্রেতার ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। সন্ধ্যার পর থেকে দোকানগুলোতে পা ফেলার জায়গা থাকে না। খুব অল্প দামের মধ্যে পুরোনো সোয়েটার, জ্যাকেট, ফুলহাতা গেঞ্জি, মোজা, মাফলার পাওয়া যায়। এসব পোশাক থেকেই বাছাই করে নিজেদের চাহিদামতো পোশাক কিনছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।

বাদল মিয়া নামে এক ক্রেতা বলেন, হতদরিদ্র থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন এসব রকমারি পোশাকের ক্রেতা। এখানে স্বল্প আয়ের লোকজন সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়ে বিভিন্ন ধরনের পোশাক পাচ্ছেন। তাই কেনাকাটা বেশি হচ্ছে। আমিও নিজেরসহ ছেলে-মেয়ের জন্য কয়েকটা পোশাক কিনেছি।

নেত্রকোনা পৌর শহরের তেরীবাজার এলাকার কাপড় বিক্রেতা সুব্রত চৌধুরী বলেন, ধীরে ধীরে বাড়ছে শীত। তাই আমরা বিভিন্ন ধরনের বাহারি রঙের শীতের কাপড় সাজিয়ে রাখছি। আমাদের এখানে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষের শীতের পোশাক রয়েছে। বেচাকেনাও ধীরে ধীরে বাড়ছে।

শহরের বড়বাজার এলাকার ফুটপাতে পোশাক বিক্রেতা করিম শেখ বলেন, শীতের কাপড় কেনার জন্য নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তরাও ভিড় করছেন আমাদের ফুটপাতের দোকানে। শীত বাড়ছে তাই, ক্রেতাদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেচাকেনাও বেশি হচ্ছে।

জেলার বারহাট্টা উপজেলা সদরের গোপালপুর বাজারের পোশাক বিক্রেতা আরিফ মৌল্লা বলেন, কয়েকদিন ধরে শীতের পোশাক ভালোই বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী দোকানে নানা ধরনের পোশাক রয়েছে। তাই ক্রেতারা ভিড় করছেন পছন্দের পোশাক কিনতে। পোশাকের দাম সর্বসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকায় বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।

জানা যায়, নেত্রকোনা এলাকার অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ পেরিয়ে কোনমেতে বেঁচে থাকা তাদের। ছিন্নমূল পরিবারের এইসব মানুষরা শীত নিবারণে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

হাওরাঞ্চল মোহনগঞ্জ বাজারের কাপড় পট্টিতে গরম কাপড় কিনতে আসা শফিকুল ইসলাম নামের এক রিকশাচালক বলেন, শীতের কারণে একদিকে কমেছে রোজগার, অন্যদিকে ছেলে-মেয়েদের শীতবস্ত্র কিনতে হিমসিম খাচ্ছি। তাও আবার গরীবের মার্কেটে ধনীদের ঠেলায় কাপড়াদি কেনা দায় হয়ে পড়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন