মুখোশধারীরা কারা

মুখোশধারীরা কারা

কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলাকালে রোববার গভীর রাতে উপাচার্যের বাসভবনে তাণ্ডব চালিয়েছে দুই শতাধিক হামলাকারী। এরমধ্যে অনেকেই ছিল মুখোশধারী। বাসভবনের বিভিন্ন কক্ষের সিলিং ফ্যান, টয়লেটের কমোড, এমনকি পানির লাইনের ট্যাপের মতো ছোটখাটো জিনিসও ভেঙেচুরে ছত্রখান করেছে তারা। ব্যবহূত আসবাবও ভাংচুর করেছে আক্রমণকারীরা। উল্লাস করেছে চেয়ার-টেবিল বাইরে বের করে তাতে আগুন ধরিয়ে।

অতীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বা ভিসি অফিসে অবরোধ বা গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটলেও গভীর রাতে কোনো ভিসির বাসভবনে আক্রমণ চালানোর ঘটনা দেশে এটিই প্রথম। এ হামলার সময় বাসভবন চত্বরে রাখা দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও অন্য দুটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। ভবনের কাঠামো ছাড়া ভেতরের কোনো কিছুই অক্ষত রাখেনি তারা। আক্রমণকারী অনেকেই মুখে কাপড় বেঁধে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলার সময় এভাবে উপাচার্যের বাসায় মুখোশধারী হামলাকারী কারা? কোটা সংস্কারের সঙ্গে উপাচার্য বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক না থাকলেও কী উদ্দেশ্যে তারা মধ্যরাতে ভিসির বাসভবনে দুই ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে?

একদিকে বাসার মধ্যে ভাংচুর হচ্ছে, অন্যদিকে বাসার পেছনে ও সামনে দাউদাউ আগুন জ্বলছে- এমন অবস্থায় আত্মরক্ষায় মেয়েকে নিয়ে দুই ঘণ্টা ঘরের আলমারির পেছনে আত্মগোপনে ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের স্ত্রী সালমা জামান। তিনি সমকালকে বলেন, রাত ১টার দিকে কয়েকশ’ ছেলেমেয়ে বাসায় ঢুকে অতর্কিতে তাণ্ডব চালায়। এ সময় তিনি মেয়েকে নিয়ে বাসার মধ্যেই লুকিয়েছিলেন। মেয়ে ভয়ে কাঁদছিল। হামলাকারীরা এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল যে, মৃত্যুর আশঙ্কায় ভীত হয়ে পড়েছিলেন মা-মেয়ে। স্বজনদের কাছে ফোন দিয়ে দোয়া চাইছিলেন তিনি। বাড়ির সামনে ও পেছনে তখন দাউদাউ করে আগুন জ্বলছিল।

অবশ্য কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা ভিসির বাসভবনে হামলা চালাননি। আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে অনুপ্রবেশকারীরা এ হামলা চালিয়েছে। তারাও হামলাকারীদের বিচার দাবি করেছেন। হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, এ হামলার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে। হামলার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ফোন করে কুশল জেনেছেন বলেও জানান উপাচার্য।

হামলার বর্ণনা : রোববার রাতে উপাচার্যের বাসভবনে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাত ১টার দিকে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী গেট ভেঙে ও দেয়াল টপকে বাসভবনের মধ্যে ঢুকে দুই ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায়। তারা জানান, এ সময় ভবনের দ্বিতীয় তলায় উপাচার্য আখতারুজ্জামান, তার স্ত্রী সালমা জামান এবং তাদের দুই ছেলেমেয়ে ছিলেন। নিচতলা থেকে ভাংচুর করতে করতে হামলাকারীরা দোতলায় উঠে যায়। নিরাপত্তাকর্মী হাসান আরিফ বলেন, হামলাকারীরা কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর করে। বাসভবনে সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে প্যানেল বোর্ড নিয়ে যায় হামলাকারীরা।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার রাত ১১টায় সমকালকে বলেন, উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি।

শুধু ভবনটাই দাঁড়িয়ে রয়েছে, ভাংচুর হয়েছে সবকিছু : ইটের তৈরি বাসভবনটিই শুধু দাঁড়িয়ে আছে এখন। এর জানালা-দরজাসহ বাসার ভেতরের সব আসবাব ভাংচুর ও লণ্ডভণ্ড করেছে হামলাকারীরা। হামলাকারীদের লাঠির আঘাতে সিলিং ফ্যানের পাখাগুলোও বেঁকে গেছে। ঝাড়বাতির অস্তিত্বই রাখেনি তারা। টয়লেটের কমোড, রান্নাঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর এবং পানির কলের ট্যাপও তারা খুলে ফেলেছে। সরেজমিন দেখা যায়, ভবনের চারপাশে ফাঁকা জায়গা। দক্ষিণ পাশে গাড়ি রাখার গ্যারেজ। দ্বিতল ভবনের ওপরে ও নিচে ছোটবড় অন্তত ১৪টি কক্ষ রয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাসভবনে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির সামনে ছাইয়ের স্তূপ ও চেয়ার-টেবিলের লোহার অংশ পড়ে রয়েছে। ঘরের চেয়ার-টেবিল সেখানে জড়ো করে আগুন দেওয়া হয়। নিচতলার বারান্দায় উঠতেই দেখা যায়, পুরো মেঝেতে কাচের টুকরো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বারান্দার পূর্বদিকে সভাকক্ষ। দেয়ালের চারপাশে সোফা থাকলেও সেগুলো লণ্ডভণ্ড অবস্থায়। দেয়াল ঘড়িটিও অক্ষত নেই। টি-টেবিলের গ্লাস ও জানালার ভাঙা কাচে ঘর ভরে গেছে। বইপত্র-কাগজপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।

সভাকক্ষের পাশেই একটি স্টোররুম। সেখানে পোশাক আয়রন করার টেবিল, তিনটি আলমারি ভেঙে পড়ে রয়েছে। জামাকাপড়গুলো মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। নিচতলার রান্নাঘরে গিয়ে দেখা যায় চিনামাটির কাপ-প্লেটের টুকরো পুরো মেঝেতে। পানির ট্যাপ ভাঙা ও খোলা অবস্থায় নিচে পড়ে আছে। এর পাশের টয়লেটের কমোড ও বেসিন ভেঙেচুরে ছিটিয়ে পড়ে আছে। নিচতলায় আরেকটি কক্ষেরও একই অবস্থা। সেখানে দুটি টেলিভিশন, দুটি ঝাড়বাতি ও আলমারি ভাঙা হয়েছে। অফিসরুমের অবস্থাও একই। দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝখানে দেয়ালে থাকা বড় গ্লাসটি ভেঙে ছড়িয়ে আছে। দোতলার পূর্বপাশে বেডরুমের একটি টেলিভিশন, একটি ফ্রিজসহ সব আসবাব ভাংচুর করা হয়েছে। এর পাশে অপর বেডরুমেরও একই অবস্থা। ডাইনিং রুম ও কিচেন রুমে গিয়ে দেখা যায়- দুটি ফ্রিজ ও একটি ওভেনসহ সব ভাংচুর করা হয়েছে। ফ্রিজে থাকা সবজি, ফলমূল, তরকারি লুট করে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা। সব ক’টি ঘর ঘুরে দেখা যায় একই অবস্থা। উপাচার্যের বাসায় লণ্ডভণ্ড অবস্থায় কাগজের স্তূপে ছিল ১৯৭৪ সালের সলিমুল্লাহ হল সংসদের বার্ষিক নাটকের প্রচারপত্র। তা থেকে জানা যায়, নাটকটির মূল চরিত্রে ছিলেন শেখ কামাল।

আগুনে পুড়েছে কাঁঠাল গাছ : বাসভবনের দক্ষিণ দিকে অনেক গাছের মধ্যে রয়েছে একটি কাঁঠাল গাছ। গাছের নিচে থাকা একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয় হামলাকারীরা। এতে গাড়ি দুটির সঙ্গে গাছটিও পুড়েছে। পাশেই গ্যারেজে থাকা উপাচার্যের ব্যবহূত পাজেরো গাড়িসহ আরও একটি প্রাইভেটকার ভাংচুর করা হয়েছে।

তিন নিরাপত্তাকর্মীর টাকা লুট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে ৪০ বছর ধরে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কর্মরত আছেন হাসান আরিফ। তিনি জানান, রোববার রাতে তিনি বাসভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। হামলাকারীরা ঢোকার সময়ই তার পকেটে থাকা এক হাজার একশ’ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ছাড়া দারোয়ান আনোয়ারের ১১ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন এবং সাহাবুদ্দিন মোল্লার একটি মোবাইল ফোন হামলাকারীরা ছিনিয়ে নেয় বলে জানান তিনি।

রক্ষা পায়নি ফুলের টবও : হামলাকারীরা বাসার মধ্যে এবং ভবনের চারপাশে টবে থাকা ফুলগাছগুলোও তছনছ করেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের নিচতলার বারান্দায় জানালা-দরজার ভাঙা কাচের মধ্যে ফুলের টবগুলোও ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। গাছসহ টবগুলো দেয়ালে আছড়ে ভেঙেছে তারা। নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, হামলাকারীরা জানাচ্ছিল, তারা ভবনের জিনিসপত্রের কোনো অস্তিত্বই রাখবে না- সব গুঁড়িয়ে দেবে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ উপাচার্য ভবনের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করতে এসব ফুটেজ বিশ্নেষণ করা হচ্ছে। মুখোশধারীদেরও শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

ভিসি জানালেন, হত্যা করতেই হামলা : উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সময় গভীর রাতে তার বাসভবনে হামলার ঘটনা সাধারণ বিক্ষোভকারীদের ছিল না। তার ভাষায়, ‘প্রশিক্ষিত’ হামলাকারীরা মুখোশ পরে এসেছিল, তারা এসেছিল ‘প্রাণনাশ’ করতে।

রোববার রাত দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে উপাচার্যের বাসভবনে হামলার এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাথরুম ও রান্নাঘর তছনছ করা হয়। ভেঙে ফেলা হয় ভবনের সিসি ক্যামেরা।

রোববার রাতে ওই হামলার পর গতকাল সকালে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমার বাসায় যারা এসেছিল লাশের রাজনীতি করতে এসেছিল। দেশকে অস্থিতিশীল করতে এসেছিল।’ উপাচার্য বলেন, ‘অনেকগুলো অপশক্তি’ এ ঘটনায় জড়িত বলে তিনি মনে করছেন। তারা এই তাণ্ডব চালিয়েছে ‘সরকারের পতন’ ঘটানোর জন্য, পরিকল্পনা করে।

মামলা করবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারের আইন-কানুন আছে, সে অনুযায়ী নিশ্চয়ই সরকার ব্যবস্থা নেবে।’

আন্দোলনকারীরা বললেন, ভাংচুরে অন্য কেউ : ভিসির বাসভবনে যারা ভাংচুর করেছে, তারা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কেউ নন। সিসি ক্যামেরা দেখে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা এ ঘটনার নিন্দাও জানিয়েছেন।

সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা এ কথা বলেন।

সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনে হামলাকারীরা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নন। তাদের আমরা চিনি না। তার দাবি, একজনকে বাসভবনের বিভিন্ন স্থানে আগুন দিতে দেখা গেছে। যেহেতু উপাচার্যের বাসভবনে সিসি ক্যামেরা আছে, তাই সেখান থেকে ফুটেজ নিয়ে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া উচিত।

‘আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ : শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ভাংচুর, হামলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ঘটনায় উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত বলে সমকালকে জানিয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও হত্যাচেষ্টা এবং ভাংচুরের ঘটনা নজিরবিহীন বলেও উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বলেন, এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আরও বলেন, এতে যারা উস্কানি দিচ্ছে, নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই তারা তা করছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চাকরির কোটা সংরক্ষণ বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং সরকার সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছে। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও মেধা না থাকলে কোটাধারীরাও চাকরিতে আসতে পারে না। কোটা থেকে পূরণ না হলে সেসব পদ মেধাতালিকা থেকে পূরণ করার নির্দেশনাও রয়েছে।

নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সংশ্নিষ্টদের ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং আন্দোলনকারীদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। এতে যারা ইন্ধন দিচ্ছেন, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।

হামলায় ইন্ধন রয়েছে- ওয়ার্কার্স পার্টি : উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত’ অভিহিত করেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। গতকাল সোমবার দলটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, কোটা ব্যবস্থা নতুন নয় এবং কোটায় নিয়োগেও মেধা অনুসরণ করা হয়। তার পরও যদি এ বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি থেকে থাকে, তা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব ছিল। কিন্তু তা না করে ‘ফেসবুক’সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে যেভাবে উত্তেজনা তৈরি করা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment