বৈঠকে দুই দেশের নেতারা ইতিহাস সৃষ্টি করে দক্ষিণ কোরিয়ায় কিম

কোরীয় উপদ্বীপকে বিভক্ত করা সামরিক সীমান্ত পেরিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। শুক্রবার সকাল দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তবর্তী পানমুনজম গ্রামে পৌঁছলে দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন তাকে স্বাগত জানান। কোরীয় যুদ্ধ-পরবর্তী ৬৫ বছরে এই প্রথম উত্তর কোরিয়ার কোনো নেতা দক্ষিণ কোরিয়ায় সফরে গেল।

বৈঠকে অংশ নিতে কিম জং-উন সকালে দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তবর্তী পানমুনজম গ্রামে পৌঁছলে প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান। এ সময় দুই নেতাকে হাস্যোজ্জ্বল মুখে পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করতে দেখা যায়।

দক্ষিণে ঢোকার আগে কিম দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুনকে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশের আহ্বান জানান। মুন সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে কিম জং-উনকে সঙ্গে নিয়ে আবার দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করেন।

এ সময় কোরিয়ার দুই শীর্ষ নেতা লাল গালিচার উপর দিয়ে হেঁটে যান। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী বাদ্যযন্ত্রের তালে সামরিক কায়দায় তাদের গার্ড অব অনার প্রদান করে।

আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় দক্ষিণ কোরিয়ার পিস হাউসে দুই কোরিয়ার শীর্ষ নেতাদের মধ্যকার বহুল আলোচিত বৈঠকটি শুরু হয়েছে। শীর্ষ বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে তার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি রয়েছেন তার বোন কিম ইয়ো-জং ও হেড অব স্টেট কিম ইয়ং-নাসহ নয়জন প্রতিনিধি উপস্থিত আছেন।

আলোচনা চলবে মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির আগ পর্যন্ত। বিরতির সময় দুই নেতা নিজেদের দেশে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ করবেন। এরপর বিকালে দুই নেতা দুই কোরিয়ার মাটি ও পানি ব্যবহার করে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে একটি পাইন গাছের চারা রোপণ করবেন। এরপর দ্বিতীয় দফা আলোচনায় বসবেন তারা। পরে সম্ভাব্য চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে আলোচনা শেষ হবে। এরপর দুই নেতা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় ডিনার করবেন।

দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী পানমুনজম গ্রামটি দক্ষিণ কোরিয়ার সীমানার মধ্যে পড়েছে। ১৯৫০-১৯৫৩ সাল পর্যন্ত চলা কোরীয় যুদ্ধের অবসানে পানমুনজামে যুদ্ধবিরতিতে স্বাক্ষর করেছিল দুই পক্ষ। একে তাই নিরপেক্ষ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ৫৩ এর যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরের পর থেকে আন্তঃকোরীয় আলোচনার জন্য এ স্থানটিকে বেছে নেওয়া হয়ে থাকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা ইম জং-সিউক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। এই সম্মেলনে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও স্থায়ী শান্তির নিশ্চয়তা নিয়ে বেশি আলোচনা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment