খালেদার নামে ভিডিওটি বানোয়াট: রিজভী

খালেদার নামে ভিডিওটি বানোয়াট: রিজভী

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ১৯ সেকেন্ডের যে ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে, সেটি বানানো বলে দাবি করেছেন রুহুল কবির রিজভী।বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারকে নিয়ে অপপ্রচার চালাতে একটি সেল খোলা হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী উপপ্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন এর অংশ।

শনিবার ফেসবুকে খালেদা জিয়ার নামে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়ায়। এটি শেয়ার দেন প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব। পরে তা ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে দেয়া হয়। এরপর সেটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।ওই ভিডিওতে দেখা যায় খালেদা জিয়া বলছেন, ‘আপনারা যতই বলেন আন্দোলন। আন্দোলন ঢাকায় সেভাবে করা সম্ভব হয়নি। এখানে আমাদের পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল আছেন, তারেক রহমানকে তো আপনারা চেনেন। বউয়ের সাথে গণ্ডগোল, বউ চায় ক্ষমতা, সেও (তারেক রহমান) চায় ক্ষমতা।’

ভিডিওতে আর এতে বিএনপি নেত্রীর পাশ দিয়ে মুখ দেখা যায়। আর তার বক্তব্যটির মাঝে দুইবার অন্ধকার আছে।এটি কবেকার সেটি উল্লেখ করা হয়নি ভিডিওতে। তবে তিনি যে শাড়ি পড়া ছিলেন, একই শাড়ি পড়ে ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে সফরকালে সে দেশের বিএনপির এক মতবিনিময়ে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

শনিবারই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকাটাইমসকে বলেন, এগুলো বানোয়াট। কারা এসব করছে সেটা জানা আছে।

রবিবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গয়েশ্বরের মতোই কথা বলেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথাব্যথার যেন শেষ নেই। তাকে নিয়ে তাদের (সরকার) অন্তহীন ষড়যন্ত্র বারবার ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নানা অপপ্রচারের জন্য সেল খোলা হয়েছে।’

‘প্রধানমন্ত্রীর একজন উপ-প্রেস সচিবের ফেসবুক আইডিতে নানা মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প বানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এই ধরণের অপপ্রচার নিম্ন রুচির পরিচায়ক।’‘যারা কুরুচিসম্পন্ন এবং যারা অপরাজনীতি ও অসভ্যতার চর্চা করে তারাই কেবল অসত্য ও নোংরা রাজনীতির আশ্রয় নেয়।’

‘আওয়ামী লীগ কুৎসা সঞ্চারিত মনের বিকারে ভোগে। তাদের ঐতিহ্যে সভ্যতা ও সুরুচির কখনোই কোন নিদর্শন ছিল না। সেজন্য তাদের কোন কথাই জনগণ বিশ্বাস করে না। আমি এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’খালেদা জিয়ার বড় ছেলে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানকেই দলের ভবিষ্যত নেতা হিসেবে ধরা হয়। দুই মামলায় দণ্ডিত তারেককে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনও করা হয়েছে। আবার ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

গত কয়েক বছর ধরেই তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান দলের হাল ধরতে পারেন বলে প্রচার ছিল। তবে সম্প্রতি জানা গেছে, ২০০৪ সালের জুনে তারেক রহমান রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার সময় তার স্ত্রীর পাশাপাশি কন্যা জাইমা রহমানও এই আশ্রয় চেয়েছেন এবং তারা সবাই তাদের পাসপোর্ট যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরে জমা দিয়েছেন।নিয়ম অনুযায়ী, এদের কেউ বাংলাদেশে আসলে তার রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল হয়ে যাবে। এ কারণে জোবাইদা সহসা দেশে ফিরছেন বলে যে প্রচার ছিল তা আপাত অসম্ভবই মনে হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার এই ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় শনিবার রাতে এ বিষয়ে বলেন, ‘ভিডিওটি বানোয়াট। এগুলো সরকারি দলের অপপ্রচার। নির্বাচনের আগে তারা এসব ছড়াচ্ছে। এগুলো কারা করছে এগুলো টেলিফোনে বলা যাবে না। কারা করে এগুলো আমরা বুঝি তো। ঘোড়ার ঘাস খেয়ে তো বড় হইনি, ভাত খেয়ে বড় হয়েছি।’দলের পক্ষ থেকে কি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে কি না, এমন প্রশ্নে গয়েশ্বর বলেন, ‘না কখনই না। আমাদের মধ্যে নেতৃত্ব পর্যায় এমন কোন দ্বন্দ্ব নেই। আমাদের নেতৃত্ব পর্যায় তো সব দৃশ্যমান।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment