সম্মেলনের ভোটার তালিকা লুকাচ্ছে ছাত্রলীগ

সম্মেলনের ভোটার তালিকা লুকাচ্ছে ছাত্রলীগ

বরাবরের মতো এবারও ছাত্রলীগের নেতৃত্ব বাছাই করবেন যারা, তাদের নাম অর্থাৎ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। আর ভোটার তালিকা ছাড়া সম্মেলন নিয়ে আর এ বিষয়ে গোপনীয়তার সঙ্গে নেতৃত্ব বাছাই নিয়ে ছাত্রলীগেই আছে নানা প্রশ্ন।

আগামী ১১ ও ১২ মে জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বাছাই করে দায়িত্ব ছাড়বে সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে কমিটি।তবে সম্মেলনের দুই সপ্তাহ বাকি থাকতে ভোটার তালিকা প্রকাশ না করার পাশাপাশি এবার নেতৃত্ব নির্বাচন ভোটে হবে কি না, এ নিয়েও প্রশ্ন আছে।রীতি অনুযায়ী সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর দ্বিতীয় অধিবেশনে শুরু হয় সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের জন্য ভোট।

ছাত্রলীগের ১০১টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি থেকে ২৫ জন করে কাউন্সিলর থাকেন সংগঠনটির জাতীয় সম্মেলনে। তাদের ভোটে শীর্ষ পদের নেতৃবৃন্দরা নির্বাচিত হয়।কিন্তু ভোটার তালিকা না থাকায় কারা নেতা নির্বাচনের জন্য ভোট দিচ্ছেন তাদের পরিচয় জানা যায় না।

ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাকিব হাসান সুইম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মোট ১০৭টি ইউনিট থেকে ২৫ জন কাউন্সিলর নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ভোট দিয়ে থাকেন। ইতিমধ্যে প্রায় সব ইউনিট থেকে ২৫ জন করে ভোটারের তালিকা পাঠানো হয়েছে।’

ভোটারদের নাম প্রকাশ করা হবে কি না এমন প্রশ্নে সুইম বলেন, ‘এবারও কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। তবে বিভিন্ন সমস্যার কারণে আমরা কোন সময়ই ভোটারদের নাম প্রকাশ করি না।’কেন নাম প্রকাশ করা হয় না এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি সুইম।
ছাত্রলীগের নেতৃত্ব বাছাইয়ে গত তিনটি জাতীয় সম্মেলনের ইতিহাস বলছে রিপন-রোটন (২০০৬-২০১১) কমিটিতে সারাদেশ থেকে কাউন্সিলরদের নিয়ে ভোটের আগের রাতেই নেতা কে হবে, কাকে ভোট দিতে হবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল।পরের বদিউজ্জামান সোহাগ-নাজমুল (২০১১-২০১৫) ও সাইফুর রহমান সোহাগ-জাকির (২০১৫-২০১৮) কমিটিতেও ঘটেনি এর ব্যত্যয়।

এই তিনটি সম্মেলনেই দেখা গেছে কোন কোন জেলা থেকে শুধু জেলা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভোট দিতে সংগঠনের জাতীয় সম্মেলনে যোগ দেন। তারা দুইজনই বাকি ২৩ জনের ভোট দেন। ভোটারদের পরিচয় প্রকাশ না করায় এই সমস্যা হচ্ছে।ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির অনেকেই কাউন্সিলরদের ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচনের বর্তমান ব্যবস্থাকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন। কারণ হিসেবে তারা দেখিয়েছেন, যদি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হয় তাহলে শুধু সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক নয়, সংগঠনের সব পদেই নির্বাচন করা উচিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের এক নেতা  বলেন, ‘সংগঠনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া অন্য কোনো নেতার সংগঠনে কোনো মূল্য নেই। তারা দুইজন যা সিদ্ধান্ত নেন তাই চূড়ান্ত।’এই পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগের একটি অংশ চায় সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনার পছন্দের ভিত্তিতে নির্বাচিত হোক।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment