ঈদ সামনে রেখে বেনাপোল সীমান্ত পথে ভারত থেকে গরু আসা কমেছে

শহিদুল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি।।


কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে যশোরের শার্শা ও বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে গরু আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তবে গরু আনতে বিজিবি এখন আর কাউকে সীমান্তে টপকে ভারতে যেতে দিচ্ছে না। যাও কিছু গরু আসছে তাও আবার ভারতীয়রাই সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এসে দিয়ে যাচ্ছে।
শার্শা ও বেনাপোলের আশপাশের বিভিন্ন সীমান্তের বেশিরভাগ স্থান জুড়ে কাঁটাতারের বেড়া। তবে যেসব স্থানে বেড়া নেই সেই পথে চুরি করে কিছু গরু আসছে। আর যে পথে কাঁটাতারের বেড়া সেখানে নেয়া হয় ভিন্ন কৌশল।
অন্যদিকে অবৈধ পথে গরু আনার জন্য শার্শা ও বেনাপোল পুটখালী, অগ্রভুলট, দৌলতপুর ও গোগা এই চারটি গরু খাটালে বর্তমানে সামান্য কিছু গরু আসছে। নাভারন গরু করিডোরে এসব গরু করিডোরে আদায় করা হচ্ছে ভ্যাট।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশী জাতের গরু পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন শার্শা ও বেনাপোল খামারিরা। ইতিমধ্যে এ অঞ্চলের অধিকাংশ খামারে দেশী ও সম্পূর্ণ নিরাপদ পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। সংশি­ষ্টরা বলছেন, ভারতীয় গরু আমদানি করা না হলেও কোরবানির ঈদে এর কোন প্রভাব পড়বে না।
স্থানীয়রা জানান, গত চার বছর ধরে কোরবানি উপলক্ষে সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভারতীয় গরু না আসার সুযোগে যশোরের শার্শা ও বেনাপোলের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠে বেশকিছু গরুর খামার। এসব খামারে পালন করা হচ্ছে নানা জাতের দেশী গরু। এসব গরু বিগত কয়েক বছর এ অঞ্চলের কোরবানির গরুর চাহিদাপূরণে উল্ল্যে­খযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবছরও খামারিরা কোরবানির গরু পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা দেশী জাতের গরু মোটাতাজাকরণ কাজে তৎপর হয়ে উঠেছেন।
প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, যশোরের ৮টি উপজেলায় কোরবানির ঈদ উপলক্ষে  ৩০ হাজার ৫ শত গরু ও ২৭ হাজার ছাগলের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরিতে খামারগুলে থেকে প্রায় ৪০ হাজার গরু ও ৩০ হাজার ছাগল সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যে কারণে এবছরও কোরবানির ঈদে পশুর কোনো সঙ্কট হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।
নাভারন কাস্টমস করিডোরের ইনচার্জ কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা আনজুমানআরা বেগম জানান, গত ৪/৫ বছর আগে পুটখালীসহ এসব খাটাল হয়ে প্রতিদিন ৫/৭ হাজার গরু আসতো। বর্তমানে তা কমে এসে দাড়িয়েছে ২০/২৫ টিতে। ভারত থেকে আসা গরুর মধ্যে রয়েছে সিন্ধি, ফ্রিজিয়ান, জার্সি, হরিয়ানা, নেপালি, সম্বলপুরিসহ বিভিন্ন জাতের গরু। অবৈধভাবে আসা এসব গরু বিজিবির খাটালে রেখে শুল্ক করিডোরের মাধ্যমে গরু প্রতি ৫০০ টাকা করে রাজস্ব নিয়ে বৈধতা দেওয়া হয়।
কাস্টমস করিডোর সুত্র জানায়, গত ২০১৭ সালে এসব সীমান্ত দিয়ে গত ৭ মাসে ভারত থেকে ৩৫ হাজার ৬৭৮ টি গরু আসে বাংলাদেশে। সরকার এ সময় ১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ৩৯ হাজার টাকার রাজস্ব আয় করে। একই সময়ে চলতি ২০১৮ সালে জুলাই মাস পর্যন্ত ৭ হাজার ৫২৬ টি গরু পাচার হয়ে আসে বাংলাদেশে। এ থেকে সরকার ৩৭ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা রাজস্ব আয় করেছে।
২১ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমান্ডিং অফিসার মেজর সৈয়দ সোহেল আহমেদ জানান, ভারত থেকে গরু আসা কমে গেছে। ভারত থেকে গরু আনতে কোন বাংলাদেশী রাখালকে ভারতে যেতে দেয়া হচ্ছে না। ভারতীয়রাই  শুণ্য লাইনে  এসে গরু দিয়ে যাচেছ। ফলে গত এক মাসে সীমান্তে বাংলাদেশী  হত্যা  শুণ্যের কোঠায় এসে দাড়িয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment