ঈদের পর ডায়েট

ঈদের সময় সকালে এক বাড়ি তো দুপুরে আরেক বাড়ি, লেগে ছিল একটার পর একটা দাওয়াত। ঈদ শেষ, খাওয়া-দাওয়ার পর্ব শেষ। নিয়মিত কাজকর্মে ফেরা শুরু করেছে অনেকে। নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে ঈদের পরের এ সময়টিতে খাওয়া-দাওয়ার লাগাম টেনে ধরতে হবে। নিয়ম মেনে ডায়েট শুরু করতে হবে। ঈদের সময় বাড়তি খাবার খেলে মেদভুঁড়ি কিংবা ওজন বেড়ে যায়। ওজন কমানোর জন্য বেশির ভাগ মানুষ সব সময়ই চিন্তিত থাকে—কী করলে ওজন কমবে, কী না খেলে ওজন কমবে, কোন খাবার ওজন কমায়!

ডায়েট করতে চাইলে কী খেতে হবে, এ বিষয় পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান শামসুন্নাহার নাহিদ। তিনি জানান, ডায়েট করার করার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। নিয়মগুলো মেনে চললে ভালো ফল পাওয়া যাবে। ডায়েটের বিষয়ে অনেকেই একটা ভুল ধারণা পোষণ করে, ডায়েটের সময় ভাত খাওয়া যাবে না। এটি ভুল। পরিমিত পরিমাণ ভাত ওজন বাড়ায় না, বরং কমাতে সহায়তা করে।

সকাল

সকালে খালি পেটে লেবুর রস গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন। চাইলে মধু মেশাতে পারেন। ৩০-৪০ মিনিট পর একটা ফল অথবা ভেজানো ছোলা খান। এরপর একটি বা দুটি রুটির সঙ্গে পরিমাণমতো সবজি। সপ্তাহে দুই দিন সকালে এক গ্লাস দুধও খেতে পারেন। দুধের মতো সপ্তাহে দুইটা ডিম খাওয়া যাবে। তবে কুসুম ছাড়া ডিম খাওয়া সবচেয়ে ভালো। শেষে চিনি ছাড়া এক কাপ চা।

ঈদের পরের এই সময় এবেলা ফল খেলেন তো ওবেলা ভাত খেতে পারেন। মডেল: নীধী, ছবি: অধুনাঈদের পরের এই সময় এবেলা ফল খেলেন তো ওবেলা ভাত খেতে পারেন। মডেল: নীধী, ছবি: অধুনাদুপুর

দুপুরের এক বেলার খাবার দুই বেলায় খেতে পারেন। একবার দুপুর ১২টায়, আবার বেলা ২টা-৩টায়। খাবারের তালিকায় রাখুন এক কাপ ভাত। ভাত কম খেলেও বেশি পরিমাণে সবজি খেতে পারেন। বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, গাঁজর, শসা, বেগুন, মুলা, শিম, পটল, করলা, শালগম, লাউ, মিষ্টিকুমড়া ইত্যাদি আলাদা অথবা একসঙ্গে মিশিয়েও রান্না করতে পারেন। আলুর সবজি না খাওয়াই ভালো। দুপুরে পাতে বিভিন্ন ধরনের শাক রাখুন। ওজন কমানোর জন্য সবুজ শাক খুব উপকারী। ছোট মাছ রাখুন তালিকায়। তবে বড় মাছ এক টুকরার বেশি না। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাছ এড়িয়ে চলা উচিত। সপ্তাহে একদিন মুরগির মাংস খেতে পারেন। এটা আপনাকে প্রচুর শক্তি দেবে। এ সময় লাল মাংস খাওয়া উচিত নয়। ডায়েট তালিকায় ডাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবার। আপনি সব ধরনের ডাল খেতে পারেন।

বিকেল

বিকেলে ভারী খাবার না রাখা উচিত। এ সময় হালকা কিছু খাবার খেতে হবে। বিকেলে একটি কলা খেতে পারেন। প্রতিদিন না খাওয়াই ভালো। তবে বিকেলে অন্য ভারী কিছু না খেয়ে ফল খেতে পারেন। ফলের মধ্যে কমলা, মাল্টা, আঙুর, বেদানা, ডালিম, আমড়া, পেয়ারাসহ যেকোনো মৌসুমি ফল খেতে পারেন। বিকেলের নাশতায় অবশ্যই চা রাখবেন, তবে চিনি না দেওয়াই ভালো। চায়ের বদলে মাঝে মাঝে কফিও খেতে পারেন। ঘরে তৈরি চিনি ছাড়া যেকোনো ফলের রস বিকেলে খেতে পারেন। সপ্তাহে এক দিন বাদাম জাতীয় খাবার খাওয়া যায়। শরীর সুস্থ রাখার জন্য এসব খাদ্য উপাদান দরকার।

রাত

রাতের খাবার হবে সবচেয়ে হালকা। রাতে এক কাপ ভাত, সঙ্গে অল্প পরিমাণে মাছ বা মাংস। পরিমাণমতো সবজি। এক কাপ ডাল। একটি ফল বা দই। মাঝেমধ্যে আটার রুটি খেতে পারেন। এক বা দুটি আটার রুটির সঙ্গে এক কাপ সবজি, একটি ডিম। কলা, আপেল কিংবা কমলা একটি। দুই-তিন টেবিল চামচ টক দই। এই দই হজমে সাহায্য করে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment