ঢ্যাঁড়স নাকি করলা

শাকসবজি খেলে আমাদের শরীর যেমন সুস্থ থাকে, তেমনি পুষ্টিচাহিদাও পূরণ করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় নানা রকমের সুস্বাদু শাকসবজি থাকা উচিত। ঢ্যাঁড়স ও করলা এমন একটি সবজি যা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। দুটো সবজিই রান্না করতে তুলনামূলক কম সময় লাগে। পুষ্টিগুণে ভরপুর ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ঢ্যাঁরস ও করলা পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ।

ঢ্যাঁড়স

ঢ্যাঁড়সে আঁশ আছে, শরীরের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে। একই সঙ্গে শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে রাখে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো। রক্তশূন্যতা থাকলে উপকার পাবেন। সবুজ এ সবজিতে রয়েছে হিমোগ্লোবিন, আয়রন ও ভিটামিন কে। এ উপকরণগুলো থাকার কারণে লাল প্লাটিলেট তৈরি করে এবং দুর্বলতা রোধ করে থাকেঢ্যাঁড়স চুলের জন্য খুব উপকারী। খুশকি ও উকুন রোধ করে। ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি দূর করতে বেশ কার্যকর। চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। যাঁদের ওজন বেশি তাঁরা ঢ্যাঁড়স খেতে পারেন। এটি ওজন কমাতে সহায়তা করে। ঢ্যাঁড়সে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম, তাই এটি ডায়েট মেন্যুতে রাখতে পারেন।

যাঁদের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, তাঁরা ঢ্যাঁড়স খেতে পারেন। এতে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি হবে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি ইনফ্লামেটোরি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান।

করলা

করলার তেতো স্বাদের কারণে অনেকে খেতে অপছন্দ করেন। তবে এ সবজিটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। নিয়মিত তিতা করলা খাওয়ার অভ্যাস করলে নানা রকমের রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে পাওয়া যায় প্রচুর পুষ্টি উপাদান যা শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। রক্তের সমস্যা দূর করে।

সকালে করলার রসের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন খালি পেটে খেলে রক্তের দূষিত উপাদান দূর হয়ে যায়। একই সঙ্গে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

করলার রয়েছে এডিনোসিন মনোফসফেট অ্যাকটিভেটেড প্রোটিন কাইনেজ। এটি এনজাইম বৃদ্ধি করে শরীরের কোষগুলোর চিনি গ্রহণের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা নিয়মিত করলার রস খেলে উপকার পাবেন। এর রস শরীরের কোষের ভেতর গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়াও বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তের চিনির পরিমাণ কমে যায়। করলায় আছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন বা ভিটামিন এ। তাই যাঁদের চোখের সমস্যা আছে, তাঁরা নিয়মিত করলা খেতে পারেন। এতে চোখের সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। যাঁরা নিয়মিত করলা খান, তাঁদের সর্দি, কাশি, মৌসুমি জ্বর ও অন্যান্য ছোটখাটো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়। এটি একটি রুচিবর্ধক সবজি।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment