আত্রাইয়ে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে বিক্রি ট্রেন যাত্রীরা হয়রানির শিকার!

 স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ ঃ

বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিম জোনের নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী আন্ত:নগর নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট যেন সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। টিকিট কাউন্টারে গেলেই সাফ জবাব আসন নেই। অথচ দ্বিগুণ মূল্য দিলেই বাইরের চা স্টল, ফলের দোকান ও বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যাচ্ছে ট্রেনের টিকেট। এতে করে ট্রেন যাত্রীরা চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছে। এ স্টেশন থেকে ঈদের পর ঢাকায় ফিরতে যাত্রীদের যে টিকিট ভোগান্তি, তা ছিল অবর্ণনীয়। বিশেষ করে যারা পরিবারসহ ঈদ করার জন্য এলাকায় এসেছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও চরম আকার ধারণ করেছে। জানা গেছে, ঢাকাগামী একমাত্র নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের বিরতি রয়েছে এই স্টেশনে। এমনিতেই এ স্টেশন থেকে প্রতিদিন রাজশাহীর বাগমারা, নওগাঁর রাণীনগরের কিছু অংশ ও নাটোরের সিংড়া উপজেলাসহ আত্রাইয়ের বিপুল সংখ্যক যাত্রী নীলসাগর ট্রেনে ঢাকায় যাতায়াত করে থাকেন। ঈদ মৌসুমে যাত্রীদের এ ভিড় আরও প্রকট আকার ধারণ করে। জানা যায়, আহসানগঞ্জ স্টেশন থেকে ঢাকার জন্য ৫২টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তথাপিয় এ আসনগুলো কাউন্টার খোলার সঙ্গে সঙ্গে টিকিট চলে যায় সিন্ডিকেটের হাতে। ফলে নির্ধারিত সময়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পান না সাধারণ যাত্রীরা। ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, আত্রাই থেকে নীলসাগর ট্রেনের ভাড়া ৩৪০ টাকা। নির্ধারিত ভাড়ায় টিকিট নেয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আমরা টিকিট পাই না। অথচ পরক্ষনেই টিকেট পাওয়া যায় চা স্টলসহ স্টেশনের আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায়। যেগুলো ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় কিনতে হয়। স্টেশনের এক শ্রেনির অসাধু ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগসাজসে কালোবাজারিরা টিকিট নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। ট্রেন যাত্রী ওবায়দুল খান বলেন, সেপ্টেমবরের ৩ তারিখের টিকিট নেয়ার জন্য ওপেনিং তারিখে সকালে লাইনে দাঁড়ানোর পরও আমরা চাহিদা অনুযায়ী টিকিট পাইনি। অথচ ওই তারিখের টিকিট দেদার বাইরে বিক্রি হচ্ছে। টিকিট কালোবাজার চক্রের কবল থেকে উদ্ধার করতে না পারলে একদিকে যাত্রী হয়রানী বাড়বে, অপরদিকে যে কোন সময় বড় ধরণের সংঘর্ষেরও সৃষ্টি হতে পারে। এদিকে এ টিকিট নিয়ে প্রতিনিয়ত স্টেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যাত্রীদের বাকবিতন্ডা হয়েই থাকে। আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ছাইফুল ইসলাম বলেন, যারা বাইরে টিকিট বিক্রি করে তারা যাত্রীবেশে কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে নিয়ে যায়। আর যতক্ষণ আমাদের কম্পিউটারে টিকিট শো করবে ততক্ষণ আমরা যাত্রীদের টিকিট দিতে বাধ্য। যাত্রীবেশে কেউ যদি টিকিট কিনে নিয়ে ব্যবসা করে এটা রোধ করা মুশকিল। এদিকে সচেতন মহল মনে করেন, স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মধ্যে কাউন্টারের কম্পিউটার ও কালোবাজারিদের নির্ধারিত স্থানে অভিযান চালালে এ সিন্ডিকেট তছনছ হয়ে যাবে। এলাকার বিপুল সংখ্যক ট্রেন যাত্রী এর সুফল ভোগ করতে পারবে ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment