রাতের বাস সকালে, সকালেরটা সন্ধ্যায়

রাতের বাস সকালে, সকালেরটা সন্ধ্যায়

রাত সাড়ে ১০টায় নাবিল পরিবহনে দিনাজপুর যাওয়ার কথা মুন্নার। কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন রাতে বাস ছাড়ছে না। সকালে যোগাযোগ করতে বলা হয় তাকে। পরদিন সকাল সাড়ে ৭টায় বাসে উঠতে পারেন মুন্না। ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলগামী রুটে যানজটের কারণে এ রকম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রায় সব যাত্রীকেই। অবস্থা এ রকম যে রাতের বাস ছাড়ছে সকালে, সকালেরটা সন্ধ্যায়।

 

উত্তরাঞ্চল রুটের যাত্রী সাধারণ বলছেন, স্বাভাবিকভাবে বাসায় যেতে সর্বোচ্চ সময় লাগে ৮/৯ ঘণ্টা। কিন্তু এবার ঈদের সময় বাস ছাড়ার আগেই দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা দেরি হচ্ছে। এরপর তো রয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে সেতু পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার যানজট পারি দেয়ার গজব দশা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ঈদ করতে যাওয়ার জন্য গাবতলীর বাস কাউন্টারে আসা যাত্রীদের ভোগান্তি যেন একটু বেশিই। এমনিতেই ঈদে লাগেজ বেশি। নতুন কাপড়। বাসের সিডিউল বিপর্যয়ের কারণে কাউন্টারেই দুর্বিষহ অবস্থা।

এ রকম ভোগান্তিতে পড়া দিনাজপুর রুটের যাত্রী সাইদুর রহমান জানান, তার বাস ছাড়ার কথা ছিল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায়। সেই বাস ছাড়তে ছাড়তে বিকেল ৪টা। বাস ছাড়ার আট ঘণ্টা পরও রাত ১২টা নাগাদ তিনি ছিলেন গাজীপুরের চন্দ্রায়।

রাতের বাস সকালে, সকালেরটা সন্ধ্যায়

আল হামরা পরিবহনের যাত্রী গাইবান্ধার শফিউর রহমান বলছিলেন, ঈদের মজা টুটে গেছে। এখন এমন অবস্থা যেন ছাইড়া দে কাইন্না বাঁচি। তিনি বলেন, বিকেল ৩টার বাস ছেড়েছে রাত ১২টায়। সকাল অবধি আমি যমুনা সেতু পার হতে পারিনি। ১৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে, কিছু করার নেই।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শ্যামলী পরিবহনের কর্মকর্তা আশরাফ আলী বলেন, টিকিট বিক্রির সময়ই আমরা যাত্রীদের সম্ভাব্য সিডিউল বিপর্যয়ের কথা জানিয়েছি। বিড়ম্বনার কথা চিন্তা করেই রিজার্ভ কয়েকটি বাসের ব্যবস্থা রেখেছি। রিজার্ভের সব বাস ছেড়েছে। কিন্তু কোনোটাই গন্তব্যে পৌঁছেনি। সবই আটকে আছে টাঙ্গাইলে।

হানিফ পরিবহনের সহকারী ম্যানেজার গোপাল বাবু জানান, রাস্তায় গাড়ির গতি ধীরে হওয়ায় সময়মতো সব বাস ছাড়া যাচ্ছে না। বাস ছাড়ার দরকার ছাড়ছি। কিন্তু রাস্তায় যদি আটকে থাকে তবে বাস আসবেইবা কেমনে যাবেইবা কেমনে! কিছুই করার নেই। যাত্রীদের ভোগান্তি আরো বাড়ছে।

এ বিষয়ে এসআর ট্রাভেলসের গাবতলী শাখার ব্যবস্থাপক মো. আমিন নবী জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তার যা অবস্থা তাতে অসহায় আমরাও। কী করবো বলেন! যাত্রীদের জন্য আমাদের কিছুই করার নেই।

এ দিকে জাগো নিউজের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা যানজটের কবলে। শনিবার ভোর থেকে মহাসড়কের দুই পাশের রাস্তায় ধীরগতিতে গাড়ি চলাচল করলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ যানজটের সৃষ্টি হয়।

হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বৃদ্ধি পেয়েছে যাত্রীবাহী বাস ও পশুবাহী ট্রাক। এছাড়াও দৈনন্দিনের পণ্যবাহী ট্রাকের জন্য দুই লেনের এই মহাসড়কটিতে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গত বুধবার দিবাগত রাত থেকে এই মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্ট হয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment