রাণীনগরে অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম ॥ যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটার আশংকা

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর রাণীনগরের করজগ্রাম এলাকায় লাইকুড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল চারেদিকে হেলে পরায় বাঁশের খুঁটি করে ঢোকা দিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। যেকোন সময় অবকাঠামো ভেঙ্গে পরে বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটার আশংকা করছেন শিক্ষক/শিক্ষার্থীরা। আকাশে ঘণ মেঘ দেখলেই ঝড়ে ভেঙ্গে পরে দূর্ঘটনা ঘটার আশংকায় শিক্ষার্থীরা পালিযে যায় স্কুল থেকে । বিদ্যালয় সুত্রে জানাগেল, গত ৮ বছর আগে রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে পূর্ব দিকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে করজগ্রাম এলাকায় লাইকুড়ি মৌজায় “লাইকুড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি” স্থাপন করা হয়। স্থানীয়দের সার্বিক সহযোগিতায় ওই এলাকায় শিক্ষার মান উন্নয়নে কুঞ্চির বেড়া দিয়ে মাটি লাগিয়ে বাঁশের খুটির উপর টিনের চালা করে বিদ্যালয় ভবনটি দ্বাড় করানো হয়। এর পর থেকে ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়। বিদ্যালয়ে পড়া-লেখার গুনগত মান উন্নয়ন দেখে স্থানীয়রা ছেলে/মেয়েকে ওই স্কুলে ভর্তি করানো শুরু করেন। প্রথমে বিদ্যালয়টি বে-সরকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও পরে সরকারের ঘোষনা মোতাবেক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পায় লাইকুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি । গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে পানি উঠে নির্মিত অবকাঠামো একে বারে দূর্বল হয়ে হেলে পরে যায়। অবকাঠামো রক্ষা করতে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন রকমে বিদ্যালয়ের পশ্চিম ও দক্ষিনের বাহির দিকে বাঁশের আড়ানি করে খুঁটি দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন । এছাড়া অফিস কক্ষ ও ক্লাস রুমের ভিতরে ও একই অবস্থায় ঢোকা দিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণতার মধ্যেই পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। শিক্ষকরা বলছেন,অনেক সময় আকাশে ঘণ মেঘ দেখলেই বিদ্যালয় থেকে অনেক শিক্ষার্থীরা পালিয়ে যান। ওই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর ছাত্র বাধন দেবনাথ, ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী নিয়তি দেবনাথ জানায়,আকাশে মেঘ দেখলেই খুব ভয় হয়,না জানি কখন ঝড়ে বিদ্যালয়টি ভেঙ্গে মাথায় পরে। বিদ্যালয়ে সরকারী ভাবে তেমন কোন আসবাবপত্র না পেলেও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় বেশ কিছু আসবাবপত্র মিলেছে। এছাড়া শিক্ষকরা নিজেদের অর্থায়নে কিছু জিনিসপত্রও ক্রয় করেছেন। এব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন দেবনাথ জানান, বর্তমানে বিদ্যালয়ে মোট একশত দশ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ের এমন জড়া-জির্ণতা দেখে ভয়ে অনেক অভিভাবক ছেলে/মেয়ে দিতে চাননা। বিদ্যালয়ে ভবন নির্মান হলে আরো সুন্দর শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে। তিনি বিদ্যালয়ে ভবন নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান বিদ্যালয়ের জড়া-জির্ণতার কথা স্বীকার করে জানান, ওই বিদ্যালয়ে বহুতল ভবন নির্মানের জন্য তালিকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যেই বরাদ্দ আসবে। এছাড়া বিদ্যালয় অবকাঠামো সংস্কার করার জন্য যদি কোন সুযোগ থাকে তাহলে সার্বিক ভাবে তা বাস্তবায়ন করা হবে।#

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment