টিভি নাটকে অশনিসংকেত

ভালো-মন্দে ২০১৮ সাল তো প্রায় চলেই গেল। কিন্তু ২০১৯ সালে টিভি নাটকের কী হবে? টিভি নাটক বা অনুষ্ঠানের হালচাল যা যাচ্ছে, তাতে নতুন বছর নিয়ে খুব একটা আশার কথা বলার উপায় নেই। এখন আর এ দেশের টিভি নাটক বা টেলিছবি অন্তত টিভিতে কেউ দেখেন না বললেই চলে। একটা ব্যাখ্যা দিলেই বোঝা যাবে কেন দেখেন না। এখন ৪০ মিনিটের একটি নাটক দেখার জন্য দর্শকের ৮০ থেকে ১০০ মিনিট সময় ব্যয় করতে হয়। বাদবাকি সময় বিজ্ঞাপন, নয়তো সংবাদ শিরোনাম। কার এত ধৈর্য বা মাথাব্যথা আছে এত সময় নিয়ে নাটক দেখার! এ কারণেই এখন আধুনিক দর্শকরা নাটক দেখার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন ইউটিউবকে। আর গ্রামের দর্শকরা দেখছেন ভারতীয় তথা কলকাতার টিভি সিরিয়াল। পাশাপাশি আমাদের দেশের টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ, নাটক নির্মাতা ও নাট্য রচয়িতাদের মধ্যে নিজের অজান্তেই ঢুকে গেছে অনুকরণপ্রবণতা। আমি একজন ক্ষুদ্র মানুষ হিসেবে বলতে চাই, এটা টিভি নাটকের জন্য অশনিসংকেত। একটা সময় টেলিভিশন নাটক নিয়ন্ত্রণ করতেন মেধাবী ও যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ। আর এখন?

অপূর্ব ও সাফা কবির জুটির বেশ ক’টি নাটক এ বছর প্রচারিত হয়েছে

বছর শেষে বিবিধ হতাশার কথা বলে হয়তো আপনাদের মন খারাপ করিয়ে দিলাম। চলুন এবার শুধুই আশার কথা বলি। এই প্রজন্মের প্রত্যেকেই কিন্তু একেকজন ফিল্ম মেকার। প্রত্যেকের হাতে রয়েছে মোবাইল ক্যামেরা, যা দিয়ে তারা প্রতিনিয়ত তাদের বিভিন্ন বিষয় শুটিং করে ফেসবুক ও ইউটিউবে আপলোড দিয়ে দিচ্ছেন। আর জাতি হিসেবেও কিন্তু আমরা সংবেদনশীল ও গল্পবাজ। আমাদের রয়েছে গল্পের ভাণ্ডার। এই সময়ে সারাদেশে বসবাস করা মানুষ নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত বেড়ে উঠছেন। যেগুলোর প্রত্যেকটিই এক অনন্য গল্প। এগুলো পর্দায় নিয়ে এলেই টিভি নাটকের দিন বদলে যাবে। পাশাপাশি দেশে আজ এত টিভি চ্যানেল; কিন্তু ঠিকঠাক নীতিমালার অভাবে কোনো চ্যানেলই কেউ মনোযোগ দিয়ে দেখছেন না। এ কারণেই সবাই তার বিনোদনের খোরাক হিসেবে তাকিয়ে থাকেন বহির্বিশ্বের টিভির দিকে। কেন দেখছেন? উত্তর একটাই-মানুষ তার চোখ ও মনের আরাম চায়। ফলে আমাদের নির্মাতা ও লেখকের সেই চোখ ও মনের আরামটা অন্তত দিতে হবে।

পরিশেষে… হ্যাপি নিউ ইয়ার। ২০১৯ থেকে একটি নতুন বলয়ে আমরা আমাদের টেলিভিশন নাটককে দেখতে চাই। যখন শুধু আমাদের দেশের দর্শকরা নয়, কলকাতা তথা ভারতীয় দর্শকরাও আমাদের গল্প দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে বসে থাকতেন। ঠিক তেমনটাই যেন হয় নতুন প্রজন্মের হাত ধরে। যাতে করে জীবনের নানামুখী চাপ সামলে মানুষ একটু স্বস্তি পাবেন। একটু স্বপ্নময় জগতে বিচরণ করতে পারবেন। দেখা পাবেন নতুন আনন্দের।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment