রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। কাল মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ চুক্তি সই হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আজ দিনভর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে তিনি একথা বলেন।
দিনভর দফায় দফায় বৈঠক। যার শুরুটা সকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার সমন্বয়ে ৭ সদস্যের দল যোগ দেন হাই অফিসিয়াল এই বৈঠকে। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রী বৈঠক করেন অংসান সু চি’র দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে। চার ঘণ্টাব্যাপী চলে এই বৈঠক। সন্ধ্যা দুই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনা। চলে দু’পক্ষের মধ্যে দর-কষাকষি। বিশেষ করে চুক্তিতে জাতিসংঘের মধ্যস্থতার বিষয়টিতে আপত্তি তুলে ধরে মিয়ানমার। তবে এই বিষয়ে অটল থাকে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান বলেন, ‘চুক্তি স্বাক্ষরের সব বিষয় চূড়ান্ত; কিন্তু চুক্তি এখনো হয়নি। শেষ পর্যায়ে রয়েছে’।
এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় মিয়ানমারের পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া, এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্বেগ ও আহ্বান তুলে ধরে বাংলাদেশ।
দেশটির মিনিস্ট্রিয়াল ভবনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সাং সু চি’র দপ্তর বিষয়কমন্ত্রী কিয়াও তিন্ত শোয়ের মন্ত্রী সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়।
বৈঠক হয়েছে দুই দফা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। আশা নিরাশার দোলাচলে বাংলাদেশ মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনা হয়েছে অনেক কিছুই। তবে, তার সবটুকু আলো ছিল রোহিঙ্গা ইস্যুতে। কূটনীতিতে কার পাল্লা ভারি হলো সেটি হয়তো বিশ্লেষণ করবেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তবে, রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেয়া গেলে, এটিই হবে কূটনীতিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন।