বগুড়ার শেরপুরে খামারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে সংঘর্ষ II আহত পাঁচ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার শেরপুরে খামারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারি নিয়োগপরীক্ষা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ২০ এপ্রিলশনিবার দুপুরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির লোকজনের সাথেচাকরি প্রার্থী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতেস্থানীয় খামারকান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি, চাকরি প্রার্থীসহউভয়পক্ষের অন্তত ৫জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসাদেয়া হয়। এদিকে এই উত্তপ্ত পরিবেশের মধ্যেও পুলিশি পাহারায় ওই পদেনিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে এই নিয়োগ পরীক্ষায় মোট১৯ জন চাকরি প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ৩জন প্রার্থী অংশ নেয়।প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গেকথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলার খামারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়েঅফিস সহকারি শূন্যপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। সে মোতাবেকমোট ২০জন প্রার্থী উক্ত পদে আবেদন করেন। এরমধ্যে একজন প্রার্থীরআবেদনপত্রে ক্রটি থাকায় বাকি ১৯জন প্রার্থীর নামে নিয়োগ পরীক্ষায়অংশ নেয়ার জন্য কার্ড পাঠানো হয়। কিন্তু পরীক্ষার নির্ধারিত দিন গতশনিবার দুপুর ২টায় নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর আগ মুহুর্তে হঠাৎ বিদ্যালয়পরিচালনা কমিটির সভাপতি আয়নাল হকের লোকজনের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থী রাজু আহমদ ও তার স্বজনদের বাকবিতর্ক হয়। এনিয়ে উভয়পক্ষেরমধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা হয়। এমনকি তাদের মধ্যে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টাধাওয়া। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। এতে খামারকান্দিইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুল ইসলাম আতিক, চাকরিপ্রার্থী রাজু আহমেদ ও তার বাবা বাবু মিয়াসহ উভয়পক্ষের অন্ততপাঁচজন আহত হন। এদিকে সংঘর্ষের পর অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেপরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং শান্ত করেন। পরে পুলিশি পাহারায়নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।তবে ৩জন প্রার্থী ছাড়া বাকিরা পরীক্ষায় অংশ নেননি বলে তারা জানান।অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সরিফ উদ্দিন জানান, সুষ্ঠু সুন্দরভাবেনিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে কক্ষের বাইরে একটু হইচই হলেওতেমন কোন ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া অপর এক প্রশ্নের জবাবে এইপ্রধান শিক্ষক বলেন, অন্যান্য চাকরি প্রার্থীরা কেন পরীক্ষা দেননি তাতারাই ভালো বলতে পারবেন। এ ব্যাপারে তার কোন মন্তব্য নেই বলে ফোনেরসংযোগ কেটে দেন। চাকরি প্রার্থী রাজু আহমেদ অভিযোগ করেবলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আয়নাল হক মোটা অঙ্কেরটাকা নিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে চাকরি দিতে চান। এজন্য অন্যান্যচাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষার হল থেকে জোরপূর্বক বের করেদিয়েছেন। তবে তিনি ও তার লোকজন এসব কর্মকান্ডের প্রতিবাদজানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভাপতি আয়নাল হক ও তার লোকজন তাদের ধাওয়াদেয় এবং বেধড়ক মারপিট করে আহত করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আয়নাল হক বলেন, যথাযথ নিয়মমেনেই নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এনিয়ে কারো কোন অভিযোগনেই। তবে আবেদনপত্রে ক্রটি থাকায় রাজু আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশনিতে পারেননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ও তার লোকজন নিয়োগ পরীক্ষাভুন্ডল করতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে হামলা চালায়। এমনকি তার ভাতিজাইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতিকে বেধরক মারধর করে। পরে স্থানীয় লোকজনেরবাধার মুখে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের উপস্তিতিতেনিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এ প্রসঙ্গেবক্তব্য জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজমুল হক বলেন-নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে মারামারির উপক্রম হয়েছিল। তবে ঘটনাস্থলেঅতিরিক্ত পুলিশ যাওয়ায় আর মারামারির ঘটনা ঘটেনি।শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) বুলবুল ইসলাম এ প্রসঙ্গেজানান, নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে মারামারির খবর পেয়ে সেখানে অতিরিক্তপুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এছাড়াঘটনাটি নিয়ে এখন কোন পক্ষের লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগপেলে তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment