পতিতালয়ে যেতে অস্বীকৃতি, মুখ বেঁধে রড দিয়ে স্ত্রীকে মারধর!

ভারতে মুম্বাইর পতিতালয়ে যেতে অস্বীকৃতির কারণে গভীর রাতে হাত-পা ও মুখ বেঁধে লোহার রড দিয়ে স্ত্রীকে পিটিয়েছে স্বামী (৩৭)। অভিযোগ করে গৃহবধূ বলেন, ভারতে মুম্বাইর পতিতালয়ে যেতে অস্বীকৃতির কারণেই স্বামীর এই নির্যাতন। মারধরের পর ঘরে আটকে রাখা হয় গৃহবধূকে। প্রতিবেশিদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাবার বাড়ির লোকজন গত সোমবার সন্ধ্যায় উদ্ধার করে গৃহবধূকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তিনি বলেন, স্বামীর বাড়ি নড়াইল সীমান্তবর্তী খুলনার ফুলতলা উপজেলার যুগ্নীপাশা গ্রামে। গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) এই বাড়িতে রাত ৩টার দিকে স্ত্রীর হাত-পা ও মুখ বেঁধে বাথরুমের মধ্যে লোহার রড দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন চালায় নিষ্ঠুর স্বামী। এ ঘটনায় স্ত্রীর মাথা ও কপালে একাধিক সেলাই দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে নড়াইল সদরের রুখালী গ্রামের দরিদ্র ঘরের মেয়েকে ভালোবেসে বিয়ে করেন পাশের ফুলতলা উপজেলার যুগ্নীপাশা গ্রামের এক তরকারি বিক্রেতা। তবে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়নি। স্বামী তার স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করে ভারতে যাওয়ার জন্য চাপ দেয়। একপর্যায়ে ওই গৃহবধূকে তার স্বামী ২০১৪ সালে মুম্বাই নিয়ে যায়। প্রায় তিন বছর আগে সেখান থেকে ওই গৃহবধূ স্বামীসহ বাড়িতে চলে আসেন। এরপর আবারো গৃহবধূর ওপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এ নিয়ে অন্তত পাঁচবার এলাকায় শালিসও হয়েছে। এরই মধ্যে ওই স্বামীর বিরুদ্ধে এলো রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ।

মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী আবারো আমাকে জোর করে ভারতে নিয়ে দেহব্যবসা করাতে চায়। যেতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে আমাকে মারধর করা হয়েছে। ওর (স্বামী) নামে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বুধবার মামলা দায়ের করব।

তাদের দাম্পত্যজীবনে সাত বছরের একটি মেয়ে সন্তান আছে।

অভিযুক্ত স্বামী বলেন, স্ত্রীকে ভারতে যেতে বাধা দেয়ায় প্রায়ই আমার সঙ্গে তার ঝগড়া-বিবাদ হয়। এ নিয়ে পারিবারিক এবং গ্রাম্য পর্যায়ে অনেক শালিস হয়েছে। এলাকার লোকজনের কাছে খোঁজখবর নিলে আমার কথার সত্যতা মিলবে। আমি আগে কাঁচামাল বিক্রি করতাম। এখন ইটভাটায় কাজ করে কষ্টের মধ্যে সংসার চালালেও স্ত্রীকে ভারতে যেতে দিতে রাজি না। তবে স্ত্রীকে সামলাতে না পেরে আমাদের মেয়ের বয়স যখন আড়াই বছর, তখন আমরা ভারতে যাই। প্রায় তিন বছর ওইখানে (ভারত) থাকার পর স্ত্রীকে বুঝিয়ে বাড়িতে চলে আসি। এখন আমার স্ত্রী আবার ভারতে যেতে চায়। নিষেধ করায় আমাদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ হয়েছে। রাগের মাথায় তাকে আমি মারধর করেছি।

আপনি আরও পড়তে পারেন