ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মারাঠাওয়াড়া এলাকা যখন তীব্র খরায় পুড়ছে, সেই সময় এলাকার সবচেয়ে খরাপীড়িত জেলা লাতুর পরিদর্শনে আসা মন্ত্রীর হেলিপ্যাডের জন্য ১০ হাজার লিটার পানি খরচ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার লাতুরের বেলকুন্ড গ্রামে মন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামার জন্য অস্থায়ীভাবে ওই হেলিপ্যাডটি তৈরি করা হয়।
রাজ্যের আয়করমন্ত্রী একনাথ খাডসে ভয়াবহ খরা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা দেখতে এবং পানির অভাব নিয়ন্ত্রণে নেওয়া একটি কর্মসূচির উদ্বোধন করতে ওই এলাকায় যান।
খরাপীড়িত এলাকায় পানির এই অপচয়ে সমালোচনা শুরু হলেও বিজেপি প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে। দলটি বলেছে, হেলিকাপ্টার নামার সময় ধুলা নিয়ন্ত্রণ জরুরি বিধায় ওই পানি খরচ করা হয়েছে।
বিজেপির মুখপাত্র শাইনা এনসি বলেন, “ধুলা যেন বাতাসে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য পানি ব্যবহার করা হয়েছে। ধুলার কারণে হেলিকপ্টারের পাইলট ও যাত্রীসহ আশপাশের লোকজনের শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা তৈরি হতে পারতো। খাডসে জি একজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী, তার স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে এটিকে বড় ইস্যু করে তুলবেন না।”
এ ঘটনায় বিরোধী দলীয় নেতারা খাডসে ও সরকারি কর্মকর্তাদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। হেলিকপ্টারটিকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে লাতুর শহরে না নামিয়ে বেলকুন্ডে নামানোয় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তারা।
মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অশোক চ্যাবন বলেন, “খরার সময় মন্ত্রীদের এ ধরনের ব্যবহার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার নামান্তর। তিনি সেখানে গাড়ি দিয়েও যেতে পারতেন। সরকারি কর্মকর্তাদের আরো দায়িত্বশীল হওয়া দরকার।”
মারাঠাওয়াড়া এলাকার সবেচেয়ে খরাপীড়িত অঞ্চল লাতুর। কয়েক বছরের বৃষ্টিহীন বর্ষাকাল পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি লাতুর শহরে ট্রেনযোগে পাঁচ লাখ লিটার পানযোগ্য পানি সরবরাহ করা হয়েছে।
পানির অভাব এমন মারাত্মক পর্যায়ে গেছে যে, হাসপাতালগুলোতে পানির অভাবে সময়মতো অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না; অপরদিকে গ্রামবাসীরা গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যেতে শুরু করেছেন।