‘আমার এই নোংরা কাপড় আর ছেড়া জুতো কে নিতে চাইবে?’

১৯৩৬ সালের মার্চে মাত্র ২৪ ঘণ্টার সফরে চীনে আসেন তৎকালীন সময়ে সিনেমায় সাড়া ফেলে দেয়া অভিনেতা স্যার চার্লি চ্যাপলিন। চীনে একটি আন্তর্জাতিক চিত্র প্রদর্শনীতে সংক্ষিপ্ত সফরে সাংহাই এসেছিলেন তিনি। সেখানে নানান দেশ থেকে অন্তত সেরা শ’খানেকেরও বেশী চিত্র প্রদর্শনী হয়েছিল। এরমধ্যে লিও হইসো এবং পন ইউলিয়াংয়েরও বেশকিছু চিত্র ছিল।

চ্যাপলিন চিত্রকলাগুলো বেশ পছন্দ করেছিলেন। এবং এরমধ্যে বেশকিছু তিনি নিয়েছিলেন বলেও জানা যায়। এমনিতেই তাড়াহুড়ো ছিল তার। এরমধ্যে একটি বিশাল হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বেশীর ভাগ সাংবাদিক চ্যাপলিনের বিয়ে বিষয়ে প্রশ্ন করলে সেগুলো তিনি ধূর্ততার সাথে এড়িয়ে যান। এমন কথার মধ্যে মিস্টার ক্রেস নামের একজন কিছু প্রশ্ন করেন, যেগুলোর সরাসরি উত্তর দেন চ্যাপলিন। ১৯৩৬ সালে দেয়া চীনের সাংহাইয়ে চ্যাপলিনের সেই ছোট্ট সাক্ষাৎকারটি বাংলামেইল২৪-এর দর্শকের জন্য তার মৃত্যুদিনে ছাপা হয়েছিল। ১৬ এপ্রিল তার জন্মদিনে আবারও দেখে নিতে পারেন সাক্ষাৎকারটি:

ইউরোপ-আমেরিকাতে আপনি ভীষণ জনপ্রিয়, আবার বিতর্কিত একজন মানুষ, এটা কিভাবে দেখেন?
আমি এখনো সবাক সিনেমার বিপক্ষের একজন মানুষ। মানে নির্বাক ছবি নিয়েই আছি এখনো। সবাক ছবি নিয়ে অনেকের সাথে আমার মতের অমিল আছে। সেগুলো বিস্তারিত বলার জন্য অনেক সময়ের প্রয়োজন। এত অল্প সময়ে এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই না।

জার্মানে আপনার ‘মডার্ন টাইমস’-এর মত ছবি কেন নিষিদ্ধ করা হলো? এটা কি তাদের চলতি সমাজ কাঠামোর সাথে সাংঘর্ষিক বলে, নাকি আপনি ইহুদি এইজন্য?(চ্যাপলিন ইহুদি ছিলেন না, কিন্তু সেসময় হিটলার তাকে ‘ইহুদি’ বলেই জানতেন)। 
এটা সত্যিই আমি জানি না। কি কারণে সেখানে ‘মডার্ন টাইমস’ নিষিদ্ধ করা হলো। তবে আমি মনে করি, কিছু মানুষ মুখিয়েই থাকে নিষিদ্ধ করার জন্য। মানে ভালো কিছুর মধ্যে মন্দ খোঁজে বেড়ানো অনেকের অভ্যেস। তারা সর্বদা সবকিছুতে নিষিদ্ধ করে দেয়ার মতো কারণ খোঁজে বেড়ায়।

ছবিতে আপনার ট্রেডমার্ক হাঁটার যে বিষয়টা, এটা কোথা থেকে পেলেন?
এটা ইউনিভার্সাল। একেবারেই প্রাকৃতিক, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে এটা আমিই প্রথম আবিস্কার করেছি। একটু লক্ষ করলে চীনেই এমন বহু মানুষকে দেখতে পাবেন। এটা খুবই সাধারণ।

আপনার ভবঘুরে সাজসজ্জার বিষয়টি নাকি আমেরিকায় লক্ষ টাকায় বিমাকৃত, এটা কি সত্যি?
এটা গুজব! দেখুন, আমার এই নোংরা কাপড় আর ছেড়া জুতো কে নিতে চাইবে? আপনি যদি এগুলো রাস্তায় ফেলেও রাখেন, তবুও কেউ ছুঁবে না।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment