প্লাস্টিকের একটি উপাদানের নাম বিসফেনল এ (বিপিএ)। এ উপাদানটি নানাভাবে মানুষের দেহে প্রবেশ করে প্রচুর স্বাস্থ্যগত ক্ষতির কারণ হয়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ক্ষতি হয় গর্ভস্থ শিশুর। গর্ভবতী নারীর দেহে খাদ্যচক্রসহ নানা উপায়ে প্রবেশ করলে এটি ক্ষতির কারণ হয়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
সম্প্রতি বিপিএ উপাদানটির ক্ষতিকর দিক ক্রমে জানা যাচ্ছে। এ উপাদানটি অ্যাজমা, উদ্বেগ, মেয়েদের দ্রুত বয়ঃসন্ধি, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও হৃদরোগের জন্যও দায়ী বলে মনে করছেন গবেষকরা। মূলত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের দেহেই এ উপাদানটি প্রবেশ করার ফলে এ ধরনের ক্ষতিকর বিষয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে গবেষকরা বলছেন এটি নবজাতক ও শিশুদের দেহেও প্রচুর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে, যা এতদিন বহু মানুষের অজানা ছিল।
সম্প্রতি গবেষকরা গর্ভবতী নারীর দেহে বিপিএ উপস্থিতির ফলে শিশুর মাঝে কী ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করেছেন। এ বিষয়ে একটি গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। এতে ২৪১ জন অধূমপায়ী গর্ভবতী নারী ও তার শিশুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাদের গর্ভবতী হওয়ার সময়ে মূত্রের নমুনা থেকে বিপিএ মাত্রা নির্ণয় করা হয়। এ ছাড়া তাদের শিশুকে দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এক্ষেত্রে শিশুর বয়স যখন তিন, পাঁচ, ১০ ও ১২ বছর হয় তখন বিস্তারিত পরীক্ষা করা হয়। এ সময় শিশুর শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষাও করা হয়। এতে শিশুর মনে বিষণ্ণতা ও মানসিক উদ্বেগ রয়েছে কি না, তা বিশেষভাবে পরীক্ষা করা হয়।
গবেষকরা পরীক্ষায় দেখতে পান গর্ভবতী অবস্থায় যে মায়েদের রক্তে বিপিএ বেশি ছিল তাদের ছেলে সন্তান অন্যদের তুলনায় বেশি উদ্বেগে ভুগছে। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে সে প্রভাব দেখা যায়নি। এতে গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, গর্ভবতী নারীর বিপিএ বেশি থাকলে তা তাদের ছেলে সন্তানের মাঝে বেশি প্রভাব বিস্তার করে ও ক্ষতির কারণ হয়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, প্লাস্টিকের এ উপাদানটি আরও ক্ষতি করতে পারে। তবে তা এখনও সেভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে শিশুর মানসিক সমস্যা সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া গেছে। আর মানুষের খাদ্যচক্রের মাধ্যমে এ উপাদান মানুষের দেহে প্রবেশ করে। এ ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের প্যাকেটে খাবার খাওয়া ও শিল্প-কারখানায় প্রক্রিয়াজাত নানা ধরনের খাবার অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।