রিমান্ডের পরিবর্তে আসামির স্ত্রীকে ধর্ষণ!

রিমান্ডের পরিবর্তে আসামির স্ত্রীকে ধর্ষণ!

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডাকাতি মামলার এক আসামির দুই স্ত্রীকে পুলিশের এক এসআই ও তাঁর দুই সোর্স ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ওই দুই স্ত্রীর অভিযোগ করেন, তাঁদের স্বামীকে রিমান্ডে নির্যাতন করা হবে না—এ নিশ্চয়তা দিয়ে পুলিশ টাকা দাবি করে। কিন্তু পুরো টাকা দিতে না পারায় এসআই ও দুই সোর্স তাদের ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় শুক্রবার ২ সেপ্টেম্বর রাতে দুই সোর্সকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে আজ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, গত ২৯ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একটি ডাকাতি মামলায় নগরের মিজমিজি দক্ষিণপাড়ার এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ৩১ আগস্ট আদালতের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে এক দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

আসামির দুই স্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, রিমান্ডে নেওয়ার পর বুধবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই আতাউর রহমানের সোর্স নজরুল ইসলাম ওরফে তোতলা নজরুল ও শুভ ফোন করে তাঁদের (দুই স্ত্রী) থানায় যেতে বলেন। তাঁরা থানায় গেলে দুই সোর্স তাঁদের বলেন, ২৫ হাজার টাকা দিলে তাঁদের স্বামীকে রিমান্ডে নির্যাতন করা হবে না। দুই সোর্স ওই টাকা নিয়ে এসআই আতাউর রহমানের কাছে যেতে বলেন। কিছু টাকা জোগাড় করার পর রাত সাড়ে দশটার দিকে তাঁরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কাছে দুই সোর্স নজরুল ও শুভের সঙ্গে আবার দেখা করেন। নজরুল ও শুভ তাঁদের একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। সেখানে তাঁরা দুই সোর্সকে দাবি করা ২৫ হাজার মধ্যে ছয় হাজার টাকা দেন। কিন্তু বাকি ১৯ হাজার টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় নজরুল ও শুভ রাতে সেখানে তাঁদের সঙ্গে থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দেন।

এতে রাজি না হওয়ায় সাইফুল ও শুভ তাঁদের ভয় দেখিয়ে পৃথক কক্ষে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসআই আতাউর ফ্ল্যাটে ঢোকেন। তখন তিনি স্বাভাবিক ছিলেন না। আতাউর পরে আসামির ছোট স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরে এসআই ও দুই সোর্স তাঁদের (দুই স্ত্রী) সতর্ক করে বলেন, এসব কথা তাঁদের স্বামীকে বললে আরও মামলা দেওয়া হবে। পরে রাত দুইটার দিকে এসআই ও দুই সোর্স তাঁদের থানায় নিয়ে যান। রিমান্ডে কোনো মারধর করা হয়নি তা প্রমাণ করার জন্য তাঁদের স্বামীকে তাঁদের সামনে আনা হয়।

জানতে চাইলে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই আতাউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি মিথ্যে। আমার সঙ্গে কারও কোনো কথা কিংবা লেনদেনের আলাপ হয়নি। সোর্স নজরুল ও শুভ তিনি ছাড়াও আরও অনেক পুলিশের হয়ে কাজ করেন বলে তিনি স্বীকার করেন।

এদিকে এ ঘটনায় আজ রাতে দুই সোর্স নজরুল ও শুভকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান। আর রাতেই ঘটনার তদন্তে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. ফারুক হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, সহকারী পুলিশ সুপার ( ক-অঞ্চল) আবদুল্লাহ মাসুদ ও জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুনুর রশিদ মণ্ডল।

তদন্ত কমিটি প্রধান ফারুক হোসেন দাবি করেন, প্রাথমিক তদন্তে দুই সোর্স নজরুল ও শুভর বিরুদ্ধে ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এসআই আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment