নড়াইলে চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশুর মজুদ বেশি

নড়াইলে কোরবানির হাট জমে উঠেছে। এ বছর হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর তেমন একটা দেখা না পাওয়ায় স্থানীয় খামারিদের গরুর চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি ছাগলের বেচাকেনাও জমে উঠেছে। জেলায় চাহিদার তুলনায় প্রায় ৭ হাজার পশু বেশি মজুদ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

প্রাণি সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের তিনটি উপজেলায় ১৬টি স্থায়ী হাটসহ মওসুমী হাটগুলোতে কোরবানির পশু বেচাকেনা জমে উঠেছে। হাটগুলোতে ঘাস, খড়, খৈল, ভূষিসহ প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা গরু ও ছাগলের বেচাকেনা চলছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতাসহ ইজারাদাররা। তবে, এ বছর দাম একটু বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

 

নড়াইল সদরের মাইজপাড়া হাটের গরু ক্রেতা আলমগীর হোসেন জানান, ভারতীয় গরু না আসায় এ বছর গরুর দাম বেশি। লোহাগড়ার ব্রাক্ষণডাঙ্গার খায়রুল ইসলাম বলেন, ভিড় এড়াতে গত শুক্রবার মাইজপাড়া হাট থেকে দু’টি দেশিজাতের গরু কিনেছি। নড়াইল শহরের দুর্গাপুরের আব্দুল আলিম জানান, গরু কেনার সময় বিদেশি গরু তেমন একটা চোখে পড়েনি। এক্ষেত্রে দেশি গরু কেনাবেচা জমে উঠেছে।

বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতা জানান, এ বছর দাম বেশি হওয়ায় ছোট আকারের গরুর চাহিদাই বেশি। এ ধরনের গরু ৪৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে, আকার ভেদে ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে দেশি গরুগুলো। গরুর পাশাপাশি একেকটি ছাগল ৭ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

kurbanir-hat

বিক্রেতাদের কয়েকজন জানান, প্রথম দিকে গরুর দাম ভালো পাওয়া গেলেও বর্তমানে একটু মন্দাভাব বিরাজ করছে। তাদের আশা শেষের দিকে জমজমাট হয়ে উঠবে কোরবানির হাটগুলো। দামও ভালো পাবেন তারা।

মাইজপাড়া পশুহাটের সভাপতি ফরিদ মোল্যাসহ বিভিন্ন হাটের ইজারাদাররা বলেন, জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিনসহ কোরবানির পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাটগুলোতে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে বেচাকেনা চলছে। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

খামার মালিকসহ কৃষকেরা জানান, ভারতীয় গরু না আসায় এবার তাদের লালন-পালন করা গরুর চাহিদা বেড়েছে। ঈদ পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করলে ভালো দাম পাবেন বলে আশা তাদের।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অমলেন্দু ঘোষ জানান, এ বছর নড়াইলে প্রায় ১৩ হাজার কোরবানির পশু চাহিদা থাকলেও ২০ হাজার ৬০০ গরু-ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় ৭ হাজারের বেশি পশু মজুদ রয়েছে। এখানকার গরুগুলো বিভিন্ন খামার এবং বাড়িতে প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে বড় করা হয়েছে। কোনো ধরণের ওষুধ ব্যবহার করে মোটাতাজাকরণ হয়নি। জেলায় কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত প্রায় ৭ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য কৃষক এবং খামারিরা প্রস্তুত করেছেন।

পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘জাল টাকা রোধে এবং বেচাকেনা নির্বিঘœ করতে কোরবানির হাটগুলোতে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। এছাড়া সড়ক পথসহ কোথাও পশুবাহী গাড়ি থামিয়ে কেউ যেন চাঁদাবাজি করতে না পারে, সেদিকেও আমরা সর্তক দৃষ্টি রেখেছি।’

এদিকে, আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে গোশত সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজের পাশাপাশি অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বেচাকেনাও জমে উঠেছে। এছাড়া কোরবানির পশু জবাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ছুরি, দা, বটি, চাপাতির চাহিদাও বেড়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment