আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী
জুবাইর বিন মুতইম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ বুখারি : ৫৫২৫)
হারাম খাদ্য ভক্ষণকারী
জাবের বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা লালিত-পালিত হয়েছে, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সুনানে বায়হাকি : ৫৫২০)
মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান ও দাইয়ুস নারী
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তিন শ্রেণির লোক জান্নাতে যাবে না—মাতা-পিতার অবাধ্য, দাইয়ুস (অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-বোন প্রমুখ অধীনস্থ নারীকে বেপর্দা চলাফেরায় বাধা দেয় না) এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলা।’ (মুসতাদরাকে হাকেম : ২২৬)
প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যার অত্যাচার থেকে প্রতিবেশীরা নিরাপদ নয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ মুসলিম : ৬৬)
অশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি
হারেছা বিন ওহাব (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘অশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না।’ (আবু দাউদ : ৪১৬৮)
প্রতারণাকারী শাসক
মাকাল বিন ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘মুসলমানদের ওপর প্রতিনিধিত্বকারী শাসক যদি এ অবস্থায় মারা যায় যে সে তার অধীনস্থদের ধোঁকা দিয়েছে, তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।’ (সহিহ বুখারি : ৬৬১৮)
অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কসম করে কোনো মুসলমানের সম্পদ আত্মসাৎ করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব করে দেন এবং জান্নাত হারাম করেন। এক ব্যক্তি বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদিও সামান্য কোনো জিনিস হয়? তিনি বললেন, যদিও পিপুল গাছের একটি ছোট ডাল হোক না কেন।’ (সহিহ মুসলিম : ১৯৬)
খোঁটাদানকারী, অবাধ্য সন্তান ও মদ্যপ
আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘উপকার করে খোঁটা দানকারী, মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, সর্বদা মদপানকারী—এই তিন শ্রেণির মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সুনানে নাসায়ি : ৫৫৭৭)
চোগলখোর
হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ মুসলিম : ১৫১)
অন্য পিতার সঙ্গে সম্বন্ধকারী
সা‘দ ও আবু বাকরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি জেনেশুনে নিজেকে অন্য পিতার সঙ্গে সম্পর্কিত করে—অর্থাৎ নিজেকে অন্য পিতার সন্তান বলে পরিচয় দেয়, তার জন্য জান্নাত হারাম।’ (সহিহ বুখারি : ৬২৬৯)
দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে ইলম অর্জনকারী
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ইলম দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা হয় সেই ইলম যে ব্যক্তি দুনিয়াবি কোনো স্বার্থ-সম্পদ হাসিলের উদ্দেশ্যে শিক্ষা করে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।’ (আবু দাউদ : ৩১৭৯)
গর্ব-অহংকারকারী
আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার রয়েছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ মুসলিম : ১৩১)
নবীজির নাফরমানি
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমার সব উম্মত জান্নাতে যাবে, কিন্তু সে ব্যক্তি নয়, যে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে। সাহাবিরা আরজ করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! কে অস্বীকার করেছে? তিনি বললেন, যে আমার আনুগত্য করে, সে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার নাফরমানি করে, সে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে।’ (সহিহ বুখারি : ৬৭৩৭)
অকারণে তালাক কামনাকারী নারী
সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে নারী তার স্বামীর কাছে অকারণে তালাক কামনা করে, সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না।’ (সুনান তিরমিজি : ১১০৮)
কালো কলপ ব্যবহারকারী
আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘শেষ যুগে কিছু লোক কবুতরের সিনার ন্যায় কালো কলপ ব্যবহার করবে। তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।’ (সুনানে নাসায়ি : ৪৯৮৮)
ওয়ারিসকে বঞ্চিতকারী
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ওয়ারিসকে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করল, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের অংশ থেকে বঞ্চিত করবেন।’ (সুনানে বিন মাজাহ : ২৬৯৪)
লৌকিকতা প্রদর্শনকারী
আবু হুরাইরা (রা.) সূত্রে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম একজন শহীদকে ডাকা হবে। অতঃপর একজন ক্বারিকে। তারপর একজন দানশীল ব্যক্তিকে হাজির করা হবে। প্রত্যেককে তার কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। অতঃপর শহীদকে বাহাদুর খ্যাতি লাভের উদ্দেশ্যে জিহাদ করার অপরাধে, ক্বারিকে বড় ক্বারির খ্যাতি লাভের জন্য কিরাত শেখার অপরাধে এবং দানশীলকে বড় দাতা উপাধি লাভের নিয়তে দান-সদকা করার অপরাধে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (সহিহ মুসলিম : ৩৫২৭)