গোবিন্দগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

গোবিন্দগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি ঃ

গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নে নীতিমালা না মেনেই অবাধে গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই ইউনিয়নের ফুলবাড়ী ঈদ গাঁ মাঠ থেকে কাপাসিয়ার নাসিরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারের গাছ (ইউক্লিপটাস) অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে। গত পাঁচদিন থেকে তালুককানুপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় বে-সরকারি সংগঠন ‘বাংলাদেশ জাতীয় শাপলা ফুল আদর্শ সমবায় সমিতির’ যোগসাজেসে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ওই রাস্তার গাছ কাটছে। সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছরের পুরনো রাস্তার দুইধারের গাছগুলো সৌন্দর্য বর্ধন করে ছায়া দিয়ে আসছে। এই পথে চলাচল করা হাজারো মানুষ মাথার উপরের রোদের গ্রাস থেকে রক্ষা করত এই গাছগুলো। গাছগুলো থাকার ফলে রাস্তার দুই ধারের মাটি ভেঙ্গে যেত না। গত পাঁচদিন থেকে ওই রাস্তর গাছগুলো কাটা হচ্ছে। ওই রাস্তার গাছগুলো তালুককানুপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম লিচু ক্রয় করে নিজ উদ্যোগে কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগসোমবার (১৫ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তালুককানুপুর ইউনিয়নের ফুলবাড়ী ঈদ গাঁ মাঠ থেকে দামোদরপুর পর্যন্ত রাস্তাটির দুই ধারের গাছ (ইউক্লিপটাস) কাটার কাজ চলছে। কাটা গাছ গুলো রাস্তার দুই পার্শ্বের জমিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই পড়ে থাকা লম্বা গাছ গুলো ছোট গুল করার জন্য কয়েক জন ব্যস্ত শ্রমিক এবং অনেকে সেই গুলগুলো ব্যাটারি চালিত ভ্যানে ওঠাতে ব্যস্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, গত কয়েকদিনে চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতার যোগসাজসে গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। অথচ এই অবৈধ গাছ কাটা দেখার বা রোধ করার কেউ নেই। প্রায় চার শতাধিকেরও বেশি গাছ (ইউক্লিপটাস) ক্রয় করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জাঙ্গাহী আলম লিচু। গোবিন্দগঞ্জ বন বিভাগের ফরেষ্টার মিজানুর রহমান বলেন, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে গাছ কাটার নীতিমালা অনুযায়ী, ইউনিয়ন পরিষদের মালিকানাধীন কোন গাছ বিক্রয় করতে ইউনিয়ন পরিষদের সভায় সিন্ধান্ত নিতে হয়। এই সিন্ধান্ত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব আকারে উপজেলা কমিটি বরাবরে পাঠাতে হবে।

উপজেলা কমিটির আহবায়ক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সদস্য সচিব সহকারি কমিশনার (ভূমি)। বাকি চারসদস্যরা হলেন উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার প্রতিনিধি। তিনি আরও বলেন, উপজেলা পরিষদের অনুমতি না নিয়ে ওই ইউনিয়নে গাছ কাটা হচ্ছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তালুককানুপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও সমিতির কাছ থেকে ১০ লাখ টাকায় ফুলবাড়ি ঈদগাহ মাঠ থেকে কাপাসিয়া নাসিরের বাড়ি পর্যন্ত সড়কের গাছ ক্রয় করেছি। শাপলা ফুল আদর্শ সমবায় সমিতির সভাপতি রাসেল মিয়া বলেন, ওই রাস্তার ধারের গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে। তবে অনুমতি নিয়েছেন কিনা, তা চেয়ারম্যান সাহেব জানেন। গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা থেকে এই রিপোর্ট করা পর্যন্ত তালুককানুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতিকুর রহমানের মোবাইলে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও মোবাইল ফোন রিসিভ করেনি তিনি। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শীলাব্রত কর্মকার মুঠোফোনে বলেন, ওই ইউনিয়নে গাছ কাটার কোন অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment